পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা: বিশাল নিয়োগ দুর্নীতির অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যই কি লুকিয়ে জীবনকৃষ্ণ সাহার দুটি মোবাইলে? বড়ঞার তৃণমূল বিধায়কের দুটি মোবাইল থেকে ডেটা সংগ্রহের লক্ষ্যে দিল্লি থেকে কলকাতায় এসেছেন CBI-এর দুই ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ। কেন্দ্রীয় এজেন্সি সূত্রে খবর, সাইবার বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিয়ে ডেটা সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা। CBI সূত্রে দাবি, এখনও তদন্তে চূড়ান্ত অসহযোগিতা করছেন জীবনকৃষ্ণ। 


এক বিধায়কের ফোন নিয়ে ঘটে গেছে তুলকালাম কাণ্ড। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে আরেক বিধায়কের বাড়িতে অভিযান চালাতে গিয়ে, শুরুতেই তাঁর দুটি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে সিবিআই। তারপর, ইদের সকালে দোকানে গিয়ে নতুন মোবাইল ফোন ও সিম নিয়েছেন তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা। 


পুকুরমন্থন কাণ্ডের পর নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে হঠাতই যেন আরও বেশি করে KEY-ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছে অভিযুক্তদের মোবাইল ফোন। কী তথ্য রয়েছে জীবনকৃষ্ণ সাহার দুটি মোবাইল ফোনে? চাকরি দেওয়ার নামে বাজার থেকে কত টাকা তুলেছিলেন বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক? কার কার কাছে চাকরি বিক্রির টাকা পাঠাতেন তিনি? এই সংক্রান্ত সব তথ্যই কি লুকিয়ে রয়েছে জীবনের মোবাইলে? 


CBI সূত্রে খবর, ধৃত তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়ি লাগোয়া পুকুর থেকে উদ্ধার হওয়া দুটি মোবাইলের স্বাস্থ্যোদ্ধার করে, তারই হদিশ পেতে চাইছেন গোয়েন্দারা। কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, তল্লাশি অভিযানের মাঝপথে নিজের দুটি মোবাইল ফোন বাড়ির পাশের পুকুরে ছু়ড়ে ফেলে দিয়েছিলেন বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক। প্রায় তিনদিন ধরে পুকুরের জল ছেঁচে, মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে পুকুরের মাটি সরিয়ে শেষে উদ্ধার করা হয় মোবাইল ফোন দুটি। 


জীবনকৃষ্ণর ফেলে দেওয়া সেই দুটি মোবাইল ফোন থেকে ডেটা সংগ্রহের জন্য, শুক্রবার রাতেই দিল্লি থেকে কলকাতায় পৌঁছেছেন, সিবিআই-এর দুই ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ।  CBI সূত্রে খবর, নিজম প্যালেসে, তাঁদেরই সাইবার বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিয়ে, জীবনের দুটি মোবাইল ফোন থেকে ডেটা সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। 


সিবিআই সূত্রের খবর, জীবনকৃষ্ণ সাহার দুটি ফোনই অ্য়ানড্রয়েড এবং ওয়াটার রেসিসট্য়ান্ট। ফলে মোবাইলগুলির খুব বেশি ক্ষতি হয়নি বলেই অনুমান সিবিআই-এর।  অফিসাররা মনে করছেন, ফোনে থাকা তথ্য রিট্রিভ করা সম্ভব। 


নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে সিবিআই-এর হাতে ধৃত বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণর জামিনের আর্জি শুক্রবারই খারিজ হয়ে গেছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত জীবনকে ফের সিবিআই হেফাজতেই পাঠিয়েছে আদালত। 


সিবিআই সূত্রে দাবি, তাঁর বাড়িতে তল্লাশি অভিযানের সময়, ঠিক যেভাবে তদন্তে অসহযোগিতা করছিলেন জীবন, সিবিআই হেফাজতেও তিনি ঠিক তাই করে চলেছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রশ্নের মুখে চুপ করে থাকছেন তিনি। এভাবেই উত্তর এড়িয়ে যাচ্ছেন বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক। 



সিবিআই-এর দাবি অনুযায়ী, মুখে কুলুপ এঁটেছেন জীবনকৃষ্ণ। নিয়োগ দুর্নীতিতে জীবনের কলকাঠির তল পেতে, জিওনকাঠি হতো পারে বড়ঞার বিধায়কের মোবাইল ফোন, তেমনই মনে করছেন তদন্তকারীরা।