রাজীব চৌধুরী, মুর্শিদাবাদ :  ২০১৯-এ জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ডে দোষীকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ (Death Sentence)। দোষী উৎপল বেহরাকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ বহরমপুরে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের (Baharampur Fast Track Court)। দু'দিন আগে দোষী সাব্যস্থ করার পর এদিন এক লাইনের নির্দেশে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে ফার্স্ট ট্র্যাক আদালত। অত্যাধুনিক সমস্ত প্রযুক্তি ব্যবহার করে দোষীর নৌকা ধরে পালিয়ে যাওয়া থেকে যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ সামনে উঠে এসেছিল আগেই।


প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে ৮ অক্টোবর জিয়াগঞ্জে সপরিবারে খুন শিক্ষক (Jiagung Murder Case)। বাড়িতেই খুন শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল, স্ত্রী বিউটি পাল এবং তাঁদের ৬ বছরের ছেলে। সেই সময় অন্তঃস্বত্বা ছিলেন শিক্ষকের স্ত্রী। সেই ঘটনায় দোষী সাব্যস্থ করার পর দোষী উৎপল বেহরাকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেন বহরমপুর ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক সন্তোষ কুমার পাঠক। যে রায়ের পর আদালতে উপস্থিত শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পালের মা ন্যায্য বিচার পেলেন জানিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। 


এই কেসে প্রথমবারের জন্য ‘রাইট ব্লকার’ ব্যবহার করা হয়েছে। রাইট ব্লকার ব্যবহার করে দেখানো হয়, জিয়াগঞ্জের ফেরিঘাটের সিসিটিভি ফুটেজ। যাতে দেখা গিয়েছে, বন্ধুপ্রকাশের বাড়ি যাওয়ার আগে ঘাট পেরোচ্ছে অভিযুক্ত, সঙ্গে ছিল ব্যাগ। আর ঘটনার পর ব্যাগ, টি-শার্ট ছাড়াই শুধুমাত্র স্যান্ডো গেঞ্জি, বার্মুডা পরে ঘাট পেরিয়ে নৌকায় উঠছে অভিযুক্ত। তদন্তে উঠে এসেছিল হত্যার নৃশংসতাও। খুনের পর ধারাল অস্ত্র, ব্যাগ, জুতো ঘটনাস্থলেই ফেলে পালিয়েছিল খুনি। ঘাট পার হওয়ার জন্য নৌকায় ওঠার আগে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল টি-শার্টও । নৌকা থেকে আজিমগঞ্জে (Azimgung) নেমে টি-শার্ট কিনে বাড়ি ফেরে ওই যুবক।


তদন্ত সূত্রে উঠে এসেছে, আগে থেকেই খুনের পরিকল্পনা করেছিল অভিযুক্ত। কেনা হয়েছিল ধারাল অস্ত্র। তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে সিসিটিভি ফুটেজও (CCTV Footage) । ঘটনাস্থল থেকে বাজেয়াপ্ত হওয়া অস্ত্রে ছিল ধৃতের আঙুলের ছাপ। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ব্যাগ নিয়ে ঘটনাস্থলের দিকে যাচ্ছেন অভিযুক্ত। কিন্তু সেখান থেকে বেরিয়ে আসার সময় তার কাছে ছিল না ব্যাগ।


পুলিশ (Police) সূত্রে জানা গিয়েছে ইনস্যুরেন্সের কাগজ নিয়েই চলছিল বিবাদ। সেখান থেকেই এই খুন।  ঘটনাস্থল থেকে বাজেয়াপ্ত হয়েছে ইনস্যুরেন্সের কাগজ। সেখানেই দেখা যাচ্ছে, সেই কাগজে লেগেছিল রক্তের দাগ। তদন্তে  থেকে উঠে এসেছে, ল্যাপস হয়ে গিয়েছিল সেই বিমা । যদিও বন্ধু প্রকাশকে বিমার জন্য টাকা দিয়েছিলেন অভিযুক্ত। তদন্তে আরও উঠে এসেছে বন্ধু প্রকাশকের সম্মতিতেই বাড়িতে ঢুকেছিল আততায়ী। ঘটনার ৭৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪২ জনকে হাজিরা দিতে হয়েছে আদালতে।  সাক্ষ  পরীক্ষা করে দেখেছে আদালত। এদিন এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন উৎপল বেহরা। 


আরও পড়ুন- এবার SSKM! হস্টেলের শৌচাগারে উদ্ধার ছাত্রীর দেহ


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন


https://t.me/abpanandaofficial