আবীর দত্ত, মুর্শিদাবাদ: ফের সীমান্তে বড়সড় সাফল্য বিএসএফের (BSF)। বিমানবন্দরই হোক কিংবা সীমান্তেই পাচারের ঘটনা হোক, প্রায় নিত্যদিন প্ল্যান বদলাচ্ছে পাচারকারীর দল। কখনও পেনের রিফিল আবার কখনও টেবলেট বানিয়ে গিলে ফেলার ঘটনাও প্রকাশ্যে এসেছে অতীতে। তবে সীমান্তে উদ্ধার হল সোনার বিস্কুট। এই ঘটনাটা সেই অর্থে তেমন ব্যাতিক্রমী না হলেও,  বড় ফারাক একটা রয়েই গিয়েছে। আর সেই ঘটনাই কার্যত প্রশ্ন তুলে ধরেছে। টাকার লোভে এবার খোদ একজন রাজমিস্ত্রি হয়ে উঠেছে সোনা পাচারকারী !


বড় সাফল্য বিএসএফ-র


জানা গিয়েছে, বিএসএফ-র হাতে ধৃত ওই পাচারকারীর থেকে ১৮৩১.৯৫ গ্রাম ওজনের ১৫ টি সোনার বিস্কুট উদ্ধার করা হয়েছে। সোনার আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য আনুমানিক ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। মূলত, জওয়ানরা, বিএসএফ-এর গোয়েন্দা বিভাগ থেকে তথ্য পেয়েছিল যে, তাঁদের এলাকা থেকে সোনা পাচার হতে চলেছে। তথ্যের ভিত্তিতে, জওয়ানরা ফিরোজপুর গ্রামের দিক থেকে একটি মোটরসাইকেলে একজন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আসতে দেখেন।  বিএসএফ-র প্রবেশদ্বারে জওয়ানরা তাকে থামিয়ে সোনা চোরাচালান সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু করে।


দু চাকার নিচে ১৫ সোনার বিস্কুট


 জিজ্ঞাসাবাদে সে আতঙ্কিত হয়ে তার মোটরসাইকেলের নিচের অংশে (চেইন কভারের কাছে ক্যাভিটি) সোনা লুকিয়ে রাখার কথা স্বীকার করে। এরপরেই জওয়ানরা চোরাচালানকারীকে ঘটনাস্থলেই আটক করে। এবং আরও গভীর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সীমান্ত চৌকিতে নিয়ে আসে।সীমান্ত চৌকিতে এসে জওয়ানরা বাইকের সেই অংশগুলি খুলে ফেলে যেখানে চোরাকারবারি সোনা লুকিয়ে রেখেছিল।  এর পরে, বাইকের যন্ত্রাংশ খুলতে, জওয়ানরা ১৫ টি সোনার বিস্কুট পান।  এসব সোনার বিস্কুট বাংলাদেশ থেকে ভারতে নিয়ে আসছিল চোরাকারবারিরা। 


'টাকার লোভে' রাজমিস্ত্রি হলেন সোনা পাচারকারী 


 জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত জানায়, সে ৪ আগস্ট ফিরোজপুর গ্রামের একজনের কাছ থেকে ওই সোনার বিস্কুটগুলি পেয়েছে।  এরপর তার নির্দেশনা মোতাবেক বিএসএফের ডিউটি ​​পয়েন্ট অতিক্রম করে সৈয়দপুর বাজারে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির কাছে সোনা হস্তান্তরের কথা ছিল।  তিনি আরও বলেন যে, সোনাটি সফলভাবে ডেলিভারি করার জন্য তিনি বাবু শেখের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা পেয়েছিলেন।  কিন্তু সোনা পাচারের আগেই জওয়ানরা তাঁকে ধরে ফেলে।  সে আরও জানায়, সে রাজমিস্ত্রির কাজ করে। তাকে টাকা দিয়ে প্রলোভন দেখানো হয়েছে। এরপরেই সে সোনা চোরাচালানে জড়িয়ে পড়ে।


অর্থের প্রলোভন


ইতিমধ্যেই সোনা-সহ আটক চোরাকারবারীকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কাস্টম অফিস জঙ্গিপুরে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ কে আর্য, ডিআইজি, জনসংযোগ কর্মকর্তা, বিএসএফ দক্ষিণবঙ্গ সীমান্ত জানিয়েছেন  যে, সোনা চোরাকারবারীরা প্রতিদিন নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করে এবং নিরীহ গ্রামবাসীদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে এই কাজটি করে। তিনি এর পাশাপাশি সীমান্তে বসবাসকারী লোকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।


আরও পড়ুন, নদিয়ায় TMC-র জয়ী প্রার্থী-সহ যুব নেতাকে 'ধারালো অস্ত্রের কোপ', পলাতক অভিযুক্ত


তথ্য প্রদানকারীকে আর্থিক পুরস্কার


মূলত সোনা চোরাচালান সংক্রান্ত কোনও তথ্য পাওয়া গেলে, তাঁরা বিএসএফ-এর সীমা সাথী হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করে এই ১৪৪১৯ নাম্বারে  রিপোর্ট করতে পারেন। এ ছাড়া দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তে আরও একটি নম্বর রয়েছে। ৯৯০৩৪ ৭২২২৭ এছাড়াও জারি করা হয়েছে যাতে সোনা চোরাচালান সংক্রান্ত হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ বা ভয়েস মেসেজ পাঠানো যায়।  সঠিক তথ্য প্রদানকারী ব্যক্তিকে উপযুক্ত পুরস্কারের অর্থ প্রদান করা হবে এবং তার পরিচয় গোপন রাখা হবে।