সাগরদিঘি : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর এবার হুমায়ুন কবীর, ফের শাসকদলের নিশানায় কার্তিক মহারাজ । হিংসায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সম্পাদক কার্তিক মহারাজকে আক্রমণে ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। 'SP থাকার সময় ডেকে পাঠিয়েছিলাম, ভয়ে আসেননি কার্তিক মহারাজ। ঘাড় ধরে ঢুকিয়ে দেব এই ভয়ে ডাকার পরেও আসেননি কার্তিক মহারাজ।' সাগরদিঘি গিয়ে কার্তিক মহারাজকে তীব্র আক্রমণে ডেবরার তৃণমূল বিধায়কের।


হুমায়ুন বলেন, "সমাজে যদি আতঙ্কবাদী, খারাপ লোক থাকে, সব জায়গায় আছে। এই যে কার্তিক মহারাজ, আমার সময় চুপ করে থাকতেন। আমি যতদিন এসপি ছিলাম, ওঁকে একবার ডেকেছিলাম। ভয়ে আসেননি। কী একটা কারণে বলেছিলাম ডেকে পাঠাতে। ভয়ে আর আসেননি। ট্যাঁ-ফু করতেন না। জানতেন, ঘাড় ধরে ঢুকিয়ে দেবে। আমি তো কাউকে রেয়াত করিনি। ক্রিমিনালদের কাউকে রেয়াত করিনি। কার্তিক মহারাজকে চেনেন তো, নাম শুনেছেন তো ? এই মাঝে মাঝে গন্ডগোল লাগায় যে লোকটা। উনি সবসময় একটা সাম্প্রদায়িক হাঙ্গামা লাগানোর চেষ্টা করেন।"


এর জবাবে বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রধান কার্তিক মহারাজ বলেন, "আমাদের যাঁরা আইনের আছেন, তাঁদের সঙ্গে পরামর্শ করে আইনি ব্যবস্থা নেব। "   


গত বছর মে মাসে বাঁকুড়ার ওন্দায় নির্বাচনী প্রচারে গিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। সেই জনসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "উনি আশ্রম চালান আমার কোনও আপত্তি নেই।  আমি যখন জিজ্ঞেস করলাম তৃণমূলের এজেন্ট নেই কেন, তখন বলল কার্তিক মহারাজ বসতে বারণ করেছেন। ওখানে কিছু লোককে ঠেকিয়েছেন, যাঁরা ছানার ব্যবসায়ী। খবর আমিও রাখি। এলাকায় এলাকায় গিয়ে আপনি ধর্মের নামে বিজেপি করে বেড়ান। আমি বলছি আপনি করুন। কিন্তু বিজেপির চিহ্নটা বুকে লাগিয়ে রেখে করুন। লুকিয়ে লুকিয়ে কেন ! আমি তাই বলেছি। আমি যেটা বলি সেটা কোনও প্রমাণ ছাড়া বলি না। আমাদের রাজ্য বাংলা আর তৃণমূল কংগ্রেসের এজেন্ট বসতে দেওয়া হবে না... তাঁদের আমি ছেড়ে দেব!''


মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে আইনি নোটিস পাঠান কার্তিক মহারাজ। স্পষ্ট জানান, মমতার মন্তব্যে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সম্মানহানি হয়েছে। বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে। আইনি নোটিসের পরেও নিজের বক্তব্যে অনড় ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আমি রামকৃষ্ণ মিশনের বিরুদ্ধে নই, আমি কেন একটা ইন্সস্টিটিউশনের বিরুদ্ধে হব? আর আমি অসম্মানই বা কেন করব? আমি তো কয়েকদিন আগেও মহারাজ অসুস্থ ছিলেন, তাঁকে দেখতে গেছিলাম। সেটা নয়, আমি বলেছি দু-একজনের কথা। গঙ্গাসাগরে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের অফিস আছে, আশ্রম আছে, ওরা এত ভাল, ওরা সত্যি আমাকে খুব ভালবাসে এবং মানুষের কাজ করে। আমি একটি লোকের নাম করে বলেছিলাম, তাঁর নাম কার্তিক মহারাজ তিনি আমাদের এজেন্ট বসতে দেয়নি তৃণমূল কংগ্রেসের। ভোটের দু-দিন আগে, মুর্শিদাবাদে যে হিংসা করিয়েছিলেন, তার হোতা ছিলেন উনি, আমি সেই জন্য বলেছিলাম এবং বলে যাব। আগে অধীর করতেন, এখন বিজেপি করেন। মুর্শিদাবাদে মনে রাখবেন, যে জায়গাটায় রেজিনগরে ভোটের দু-দিন আগে হিংসা করেছিল, সেখানটায় ওঁর আশ্রম।''