রাজীব চৌধুরী, মুর্শিদাবাদ: কর্নাটকের হিজাব (Karnataka Hijab Row) বিতর্কের রেশ এ রাজ্যেও। মুর্শিদাবাদের (Murshidabad News) একটি স্কুলে পোশাক বিধি নিয়ে (Uniform Controversy) তুলকালাম চলল দিনভর। শিক্ষকদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ থেকে চলল ইটবৃষ্টিও। পরিস্থিতি এতটাই চরমে ওঠে যে কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হয় পুলিশকে।
মুর্শিদাবাদের সুতির (Suti News) বহুতালি হাই স্কুলের ঘটনা। শনিবার সকাল থেকে সেখানে পরিস্থিতি তেতে উঠতে শুরু করে। স্থানীয় সূত্রে খবর, স্কুল খোলার পর থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকে। শিক্ষকদের ঘেরাও করেন পড়ুয়া এবং গ্রামবাসীদের একাংশ। পোশাক বিধি নিয়ে চলে বিক্ষোভ। মাইকে ঘোষণা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। কিন্তু তাতে পরিস্থিতি আরও চরমে ওঠে। শুরু হয় এলোপাথাড়ি ইটবৃষ্টি। তা থেকে মাথা বাঁচাতে দেওয়ালের আড়ালে লুকনোর চেষ্টা করেন শিক্ষকরা।
এর পর খবর পেয়েই ওই স্কুলে ছুটে যান সুতির বিধায়ক ইমানি বিশ্বাস, স্থানীয় বিডিও-সহ পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকরা। আলাপ-আলোচনায় কাজ না হওয়ায় নামানো হয় পুলিশ। পুলিশকে লক্ষ্য করেও চলে ইটবৃষ্টি। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে এর পর কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। তাতেই বেশ কিছু ক্ষণের চেষ্টায় ছত্রভঙ্গ হয়ে যান বিক্ষোভকারীরা।
গোলমালের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলেন জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার এসপি ভোলানাথ পাণ্ডেও। বেশ কিছুক্ষণ পরে নিয়ন্ত্রণে আসে পরিস্থিতি। পুলিশ সূত্রে খবর, এই ঘটনায় ১৮ জনকে আটক করা হয়েছে। তবে এই ঘটনাকে মোটেও হালকা ভাবে দেখছেন না স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং পুলিশ প্রশাসন।
আরও পড়ুন: Metro Dairy: দীর্ঘদিন ভেজাল দুধ সাপ্লাই, মেট্রো ডেয়ারীর কালেকশন সেন্টারে হানা ইনফরমেশন ব্রাঞ্চের
উল্লেখ্য, স্কুল-কলেজে মুসলিম মেয়েদের হিজাব পরা নিয়ে সম্প্রতি রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে কর্নাটকের একাধিক এলাকা। হিজাব পরে থাকায় স্কুল-কলেজে ঢোকার মুখে বহু পড়ুয়াকে আটকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এমনকি পড়ুয়াদের ঘিরে ধরে 'জয় শ্রী রাম' ধ্বনি তোলার অভিযোগও ওঠে দক্ষিণপন্থী ছাত্রদের বিরুদ্ধে। এমনকি হিজাবের সঙ্গে পাল্লা দিতে গেরুয়া উত্তরীয় পরিয়ে পড়ুয়াদের রাস্তায় নামানোর ভিডিয়ো এবং ছবিও নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
কর্নাটকের হিজাব বিতর্ক নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক মহলও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিষয়টি এখন আদালতে বিচারাধীন। তবে আপাতত স্কুল-কলেজে 'ধর্মীয় পোশাক' পরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আদালত। স্কুল খুললেও, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় এখনও বন্ধই রয়েছে সেখানে। সেই পরিস্থিতিতেই এ বার বাংলায় পৌঁছল পোশাক বিতর্ক।