রাজীব চৌধুরী, মুর্শিদাবাদ: কেন্দ্রীয় (Central) কিংবা রাজ্য (West Bengal) সরকারি চাকরি (Govt Job) পেয়ে সংসার টানার স্বপ্ন নিয়েই লড়াই চালাচ্ছিলেন তন্ময় চুনারি। হাতে ছিল এম.এ (M.A) পাসের সার্টিফিকেট (Certificate)। কিন্তু সেই স্বপ্ন অধরাই রয়ে গিয়েছে। বরং জীবনের কঠিন অধ্যায়ে স্বপ্ন ভেঙে লটারি (Lottery) বিক্রি করতে হচ্ছে তন্ময়কে।
বেকারত্বের জ্বালা বড়ই নিষ্ঠুর, যা চরম বাস্তবের মুখে দাঁড় করায়। অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা খরচ, সংসার চালাতে তাই এমএ পাশ করেও লটারির টিকিট বিক্রি করতে হচ্ছে মুর্শিদাবাদের নওদার সাকোপারা এলাকার বাসিন্দা তন্ময় চুনারিকে। আমতলা বাজার এলাকায় গেলেই দেখা যাবে ফুটপাথের ধারে এক ফালি দোকানে বসে থাকা এম এ পাশ লটারিওয়ালা তন্ময়কে।
তন্ময়ের স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা করে একটি সরকারি চাকরি পাওয়ার। কেন্দ্রীয় কিংবা রাজ্যে ডিফেন্স-এ কাজ পাওয়ার জন্য চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছে সে। যদিও এখনও পর্যন্ত 'পাস করলেও শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি' এমনটাই জানিয়েছে সে। সপ্তম শ্রেণীতে পড়ার সময়ই তাঁর বাবার মৃত্যু হয়। তারপর পড়াশোনা থেকে একপ্রকার ছুটিই হয়ে যায়।
আরও পড়ুন, দ্বিতীয় হুগলি সেতুর ওপর লরিতে দুর্ঘটনা, গোটা রাস্তায় ছড়িয়ে গেল ডিজেল!
যদিও পরবর্তীতে দাদার পরিশ্রমে ও ইচ্ছেয় ধীরে ধীরে পড়াশোনা করে এগিয়ে যেতে থাকেন তন্ময়। তবে আবারও পরিবারে নেমে আসে অন্ধকার। মাস ছয়েক আগেই সংসারের একমাত্র রোজগেরে দাদাকে হারান তন্ময়। এরপর এক প্রকার দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যায়। সংসার চালাতে তাই দাদার ব্যবসাকে আঁকড়ে ধরে সে। এম.এ পাস করে তাই বাধ্য হয়েই লটারির টিকিট বিক্রি করতে শুরু করে সে। তবে হাল ছাড়েননি। লটারির দোকানের পাশাপাশি টিউশনও করে সে।
তন্ময়ের এর দোকানের টেবিলেও লেখা রয়েছে 'এমএ পাস লটারিওয়ালা তন্ময়' । কিন্তু কেন এমন নাম? তন্ময়ের কথায়, একপ্রকার মনে জমে থাকা ক্ষোভ হতাশা থেকেই এই নামকরণ। স্থানীয়রা অবশ্য তন্ময়ের এই লড়াইকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন। তন্ময়ের লড়াই দেখে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন নওদা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিও। শেষ পর্যন্ত নিজের স্বপ্নপূরণ করতে পারেন কি না মুর্শিদাবাদের এই যুবক, সেই লড়াইই জারি এখন।