রাজীব চৌধুরী, মুর্শিদাবাদ: সরকারি প্রকল্পের টাকা থেকে কাটমানি খাওয়ার গুরুতর অভিযোগ। দলেরই দুই নেতার বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ তুললেন বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ২ শাসক নেতা। দলের ভালোর জন্যই বলেছি, মন্তব্য জীবনকৃষ্ণ সাহার। প্রকাশ্যে এই মন্তব্য দল অনুমোদন করে না, মন্তব্য মুর্শিদাবাদের তৃণমূল সাংগঠনিক জেলা সভাপতির।


বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার মা...আমাদের সন্তানসম ভাবেন। কী দেয়নি বলুন তো? কন্যাশ্রী থেকে রূপশ্রী...সেই সমস্ত টাকা থেকে কাটমানি খাচ্ছে। তাঁদের নিরস্ত করব। তাঁদের টেনে নামাতে হবে সিংহাসন থেকে। ...ভয় পাবেন না। যে ভয় দেখাবে.... যারা চুরি করেছে, তাঁরা ডাকাত। তারা ভয় পাবে। কারণ তারা চুরি করেছে। 


ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের পর, এবার বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার ভিডিও ভাইরাল। যদিও এই ভিডিওয়র সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ। ভাইরাল ভিডিওয় দলেরই দুই নেতার বিরুদ্ধে সরকারি প্রকল্পের টাকা থেকে কাটমানি খাওয়া...লুঠের টাকায় স্করপিও কেনার মতো মারাত্মক অভিযোগ তুলেছেন বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক। তিনি বলেছেন, ২টো নেতা, নাম করব না। নাম করে হাইলাইট করছি না, একদিকে এই পার্টে এক নেতা, আরেকদিকে ওই পার্টে আরেক নেতা...একজন তো মোটরবাইকের গ্যারেজ, মোটরবাইকের পাংচার সারাত, সে এখন স্করপিও চড়ছে। আর একজন কী করত? মাটির বাড়ি ছিল। সে এখন স্করপিও চড়ছে। আলিসান বাড়ি... বাংলো। কোথা থেকে পেল? জবাব চাই। আপনারা জবাব চাইবেন। 


তৃণমূল সূত্রে খবর, নাম না করে, জীবনকৃষ্ণ সাহা দলের যে দুই নেতাকে নিশানা করেছেন, তাঁরা হলেন বড়ঞা ব্লক তৃণমূল সভাপতি গোলাম মুর্শেদ ওরফে জর্জ ও যুব তৃণমূল সভাপতি মাহে আলম।


দলেরই বিধায়কের অভিযোগের জবাব দিয়েছেন এই দুই শাসকনেতা। গোলাম মুর্শেদ বলেছেন,  বিধায়ক সমালোচনা করেছে। আমি তাঁর ভিডিও ফুটেজ যোগ্য জায়গায় পাঠিয়েছি, সেখানে যেটা সিদ্ধান্ত হবে সেটাই সিদ্ধান্ত। আমি তা মাথা পেতে নেব, আমি দলের একজন শৃঙ্খলা পরায়ণ সৈনিক। কারুর বিরুদ্ধে আমার আজেবাজে কথা বলা অভ্যেস নেই বা আমি বলতেও পারব না।


মাহে আলম  বলেছেন, বিধায়ক হচ্ছেন রাজনীতিতে অনেক বাচ্চা। অল্প দিন রাজনীতিতে এসেছেন,  নতুন এমএলএ হয়েছেন।  তিনি অনেক সময় ভুলভাল মন্তব্য করেন, উনি জানেন না কোনখানে কোন কথা বলতে হয় এবং কী বিষয়ে কী বলতে হয়।
পাল্টা জীবনকৃষ্ণ সাহা  বলেছেন, আমি দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছি, দলের ভালোর জন্যেই একথা বলেছি।


এই ঘটনা ঘিরে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। অন্যদিকে, তৃণমূল বলেছে, দল এই মন্তব্য অনুমোদন করে না । তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার  সভাপতি, শাওনি সিংহ রায় বলেছেন, বিধায়কের কিছু বলার থাকলে দলের মধ্যেই বলতে পারেন। প্রকাশ্যে এই মন্তব্য দল অনুমোদন করে না।
কয়েকদিন আগেই পুলিশকে হুমকি দিয়ে বিতর্কে জড়ান ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর।  সেই বিতর্ক মিটতে না মিটতেই, এবার বিতর্কে জড়ালেন শাসকদলের আরও এক বিধায়ক।