সুজিত মণ্ডল, নদিয়া: মৃত্যুর পরে রেখে যাওয়া বাড়ির দখল নেওয়ার জন্য হঠাৎই আসরে হাজির দু-দুজন স্ত্রী। দুজনেই নিজেদের মৃত ব্যক্তির স্ত্রী হিসাবে দাবি করেন। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার (Nadia) চাকদায় (Chakdah)। একজন তো আবার নিজেকে মৃত ব্যক্তির দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী হিসেবেও নিজেকে দাবি করেছেন। তিনি তালা ভেঙে জোর করে ঢুকে গিয়েছিলেন। সেই খবর প্রথম পক্ষের স্ত্রীর কানে পৌঁছতেই তিনি বিয়ের যাবতীয় প্র মাণ, কাগজপত্র নিয়ে সেই জেরক্স করে স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছে জমা দিয়ে সেই বাড়ির দখল নিজের কাছে রাখার আবেদন করেন। এই টালমাটাল ঘটনায় শেষ পর্যন্ত পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। ২ মহিলাকেই যাবতীয় প্রমাণ দিতে বলা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে।


ঘটনাটি নদিয়ার চাকদা পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কেবিএম-এর। জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম মনোজ কুমার বিশ্বাস। তাঁর আসল বাড়ি চাকদা থানার কামালপুরে। তবে চাকদা পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কেবিএম-এ প্রায় পাঁচ কাঠা জমির ওপরে একটি বাড়ি রয়েছে। নিজেকে মনোজকুমার বিশ্বাসের স্ত্রী হিসেবে দাবিদার চায়না বিশ্বাস বলেন, ''চাকদা পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে আমার স্বামীর নামে পাঁচ কাঠা জমির উপরে একটি বাড়ি রয়েছে। পুরসভার দেওয়া একটি পুরনো ঘর রয়েছে। সেখাানে তালা মারা থাকে। দিনচারেক আগে সেই তালা ভেঙে অঞ্জু বিশ্বাস নাম করে একজন মহিলা নিজেকে আমার স্বামীর দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করে ঘরে ঢুকে যান। এরপর সেখানেই বসবাস করা শুরু করেন।''


খবর যায় স্থানীয় কাউন্সিলর মৌমিতা ভট্টাচার্যের কাছে। এই ঘটনায় কাউন্সিলর মৌমিতা ভট্টাচার্য বলেন, ''চায়না বিশ্বাস নামে একজন মহিলা মনোজ কুমার বিশ্বাসের স্ত্রী হিসেবে দাবি করে তাঁর বিয়ের যাবতীয় প্রমাণপত্রের জেরক্স আমার কাছে জমা দিয়ে গিয়েছেন। এমনকী মনোজ বাবুর পেনশনের কাগজপত্রও। তা সত্ত্বেও অঞ্জু বিশ্বাস নামে ওই মহিলা নিজেকে মনোজ কুমার বিশ্বাসের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী হিসেবে দাবি করে ঘরের দখল নিয়ে নিয়েছিল। আমি তাদের ঘর থেকে বার করে ঘরে তালা লাগিয়ে দিয়েছি। অথচ কাউকে না বলে ওই মহিলা বুধবার সকালে সেই তালা ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা করছিলেন। বারণ করা হলে তিনি বিভিন্ন রকম অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে থাকেন। তিনি বলতে থাকেন, তিনি কাউকে মানেন না। বাধ্য হয়ে পুলিশকে ডাকতে হয়। পুলিশের নির্দেশের পর ওই মহিলা চলে যেতে বাধ্য হয়। ওই মহিলা তাঁর বিয়ের কোনরকম প্রমাণপত্র দেখাতে পারেননি।''


যদিও অঞ্জু বিশ্বাস বলেন, ''আমি মনোজ বিশ্বাসের স্ত্রী। আমার স্বামীর ঘরে আমি থাকবো তাতে কেউ আমাকে বাধা দিতে পারবে না। কুড়ি বছর ধরে সংসার করেছি কোনও সমস্যা তৈরি হয়নি। হঠাৎ করে জোরপূর্বক রেজিস্ট্রি করে নেয়। তখন আমার শ্বশুরবাড়ির কেউই জানেন না। তারপর থেকেই রীতিমতো ভয় দেখাতে থাকে।'' পুরো বিষয়টি খতিয়ে দিচ্ছে চাকদা থানার পুলিশ।


আরও পড়ুন: স্টেশন ছাড়তেই খুলল ট্রেনের কাপলিং, প্রবল আতঙ্কে চিৎকার যাত্রীদের