সুজিত মণ্ডল, নদিয়া : নদিয়ার (Nadia) হাঁসখালিতে তৃণমূল নেতাকে (TMC Leader) গুলি করে খুনের ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম খালেক মণ্ডল। হাঁসখালির (Hanskhali) রামনগরের বড় চুপড়িয়া গ্রামেই বাড়ি। গতকাল বাজারের মধ্যে চায়ের দোকানে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুন করা হয় তৃণমূলের অঞ্চল সহ সভাপতি আমোদ আলি বিশ্বাসকে। এই ঘটনায় ৮ জনের বিরুদ্ধে হাঁসখালি থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বাকিদের খোঁজে চলছে তল্লাশি।
নিহত তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধেও খুন, বোমাবাজি, অস্ত্র মজুত রাখার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। একটি মামলায় বেশ কিছুদিন জেল খেটে সপ্তাহখানেক আগেই তিনি ছাড়া পান। রাজনৈতিক কারণ, ব্যক্তিগত শত্রুতা নাকি, পুরনো অপরাধ-যোগ, খুনের মোটিভ নিয়ে এখনও অন্ধকারে পুলিশ (Police)।
শুক্রবার ভরা বাজারে যেভাবে তৃণমূল নেতাকে নদিয়ায় খুন করা হয়েছিল, সেই হাড়হিম করা ঘটনার রেশ এখনও রয়েছে। প্রত্য়ক্ষদর্শীদের দাবি, বাজারে একটি চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন রামনগর বড় চুপড়িয়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার তৃণমূলের অঞ্চল সহ সভাপতি আহমেদ আলি বিশ্বাস। আচমকা তাঁকে ঘিরে ধরে ৮-১০ জনের দৃষ্কৃতী দল। প্রথমে পালানোর চেষ্টা করেন তৃণমূল নেতা। কিন্তু তাঁকে ধাওয়া করে, সামনে গিয়ে, এলোপাথাড়ি গুলি চালায় মুখ ঢাকা দুষ্কৃতীরা। ঘটনাস্থলেই মৃত্য়ু হয় তৃণমূল নেতার। এদিকে ঘটনার পরই আতঙ্কে বাজার ছেড়ে পালাতে শুরু করে সাধারণ মানুষ। চম্পট দেয় দুষকৃতীরাও। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। নিহত তৃণমূল নেতার পরিবারের তরফে আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হলেও এখনও পর্যন্ত একজনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জারি খুনের কারণ জানতে তদন্ত।
আরও পড়ুন- রিষড়ার অশান্তি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা দিল চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট
যে ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেছেন, 'এই ঘটনা যারাই ঘটাক কেউ পার পাবে না। দৃষ্কৃতীরা শাস্তি পাবে। পঞ্চায়েত ভোট যত এগিয়ে আসছে বিরোধীরা ততই উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলছে। ভাড়াটে খুনি নিয়ে আসছে। বাংলাকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে বিরোধীরা। এই বাংলা শান্তির বাংলা, যারা চেষ্টা করছেন বাংলাকে অশান্ত করতে, তাদের মানুষ ছুড়ে ফেলবে।' পাল্টা বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেছেন, 'তৃণমূল কংগ্রেস এমনভাবে আড়াআড়িভাবে বিভক্ত হয়ে গেছে, যে পঞ্চায়েতের আগে ক্ষমতা দখল, নিয়ন্ত্রণের জন্য ভেদাভেদ এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে কেউ কাউকে প্রকাশ্যে এভাবে মারতেও ভয় পাচ্ছে না। দুষ্কৃতীরা বুঝে গেছে বাংলার প্রশাসনের কোনও শাসন নেই।' কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচীর কথায়, 'রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা একেবারে তলানিতে ঠেকেছে, এই সরকারকে উৎখাত করা ছাড়া যেখানে কোনও উন্নতি সম্ভব নয়।'