প্রদ্যোৎ সরকার, কৃষ্ণনগর: এগরাকাণ্ডের পরই ইতি পড়েনি। বরং যত দিন যাচ্ছে, একের পর এক বেআইনি বাজি কারখানার হদিশ মিলছে। বিস্ফোরণে প্রাণহানিও ঘটে চলেছে প্রায় নিত্যদিন। সেই আবহেই এ বার কৃষ্ণনগর থেকে উদ্ধার করা হল আড়াই কুইন্টাল বাজি (Firecrackers Seized)। পুলিশ এবং প্রশাসনের নাকের ডকায় একটি গুদামে মজুত করে রাখা ছিল ওই বিপুল পরিমাণ বাজি। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে হানা দেয় পুলিশ। তাতেই উদ্ধার করা গেল।
নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরের ঘটনা (Nadia News)। কালিনগরের একটি গুদামে মজুত ছিল ওই বিপুল পরিমাণ বাজি। একের পর এক বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ, হতাহতের জেরে এই মুহূর্তে চরম তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে পুলিশ এবং প্রশাসনের অন্দরে। সেই আবহেই সোমবার রাজে গোপন সূত্রে ওই গুদামে বাজি মজুত থাকার খবর মেলে। তাতে রাতেই গুদামে হানা দেয় কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানার পুলিশ। তাতেই উদ্ধার হয় আড়াই কুইন্টাল বাজি। সেগুলি বাজেয়াপ্ত করে থানায় নিয়ে আসা হয়। তার পর ভিজিয়ে দেওয়া হয় জলে।
তবে শুধু কৃষ্ণনগরই নয়, পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বীরভূম, উত্তর ২৪ পরগনা থেকেও বিপুল পরিমাণ বাজি উদ্ধার হয়েছে। দত্তপুকুর, বেলঘরিয়া এবং রহড়া থেকেও উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণ বেআইনি বাজি। সোমবার দত্তপুকুরের নীলগঞ্জ, সাইবোনা, বেড়ি নারায়ণপুকুরে একাধিক গুদামে তল্লাশি চালিয়ে ১০ টন নিষিদ্ধ শব্দবাজি উদ্ধার করে দত্তপুকুর থানার পুলিশ। বেআইনি বাজি মজুতের অভিযোগে জাকির হোসেনকে নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। গুদামের মালিক পলাতক।
আবার একইদিনে বেলঘরিয়ার বিবেকানন্দ নগর থেকেও ৩০০ কেজি বেআইনি বাজি উদ্ধার করেছে বেলঘরিয়া থানার পুলিশ। বাজি
ব্যবসায়ী টিঙ্কু মজুমদারকে গ্রেফতার করা হয়। এর পর রহড়ার বলাগড় রায়পাড়াতেও অভিযান চালায় পুলিশ। প্রায় ৫০০ কেজি বেআইনি বাজি উদ্ধারের পাশাপাশি, সাহেব রায় নামে এক বাজি ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়। গত ১৬ মে, এগরাকাণ্ডের পর জেলায় জেলায় বেআইনি বাজি উদ্ধারে পুলিশি তৎপরতা বেড়েছে।
মঙ্গলবার সকালে আবার মালদার ইংরেজবাজারে বাজির বলি হয়েছেন দুইজন। পুরসভার নাকের ডগায় পুর বাজারের মধ্যে বাজির দোকানটি ছিল। আজ সকাল ৬টা নাগাদ সেই বাজির দোকানে আগুন লাগে। ভয়াবহ আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয় দুইজনের। দোকানের শাটার ভেঙে একজনের দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। গুরুতর জখম আর একজনের মৃত্যু হয় হাসপাতালে। আগুন নেভাতে গিয়ে ধোঁয়ায় অসুস্থ পড়েন এক দমকল কর্মীও।
ইংরেজবাজারে পুর-বাজারে ওই দোকানে প্রচুর বাজি মজুত করা ছিল। একের পর এক বিস্ফোরণ হয়। পাশের আরও ৪টি দোকানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। গোটা এলাকা কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়।