সুজিত মণ্ডল, নদিয়া : এক বিরল অস্ত্রপ্রচার করে নজির গড়ল কল্যাণী কলেজ অফ মেডিসিন এন্ড জেএনএম হাসপাতাল। কিছুদিন আগেও ডানদিকে হার্ট ও অন্যান্য অর্গ্যান থাকা এক মহিলার শরীরে জটিল অস্ত্রোপচার করে সাফল্য পায় কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতাল। এবার এই কাজ হল কল্যাণীর হাসপাতালে। এক্ষেত্রেও রোগিণীর শরীরে হার্ট থেকে বৃহদান্ত্র, সবকিছুরই অবস্থান উল্টোদিকে।


১০ লাখের মধ্যে একজনের হয়ত এমনটি দেখা যায়। যাকে বলে সিটাস ইনভারসাস। অর্থাৎ তাঁর দেহের প্রধান অঙ্গগুলি সাধারণত   যেদিকে থাকার কথা , ঠিক তার উল্টো দিকে সেই অঙ্গগুলির অবস্থান। এটা কিন্তু ডাক্তারদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হয়।   কারণ বেশির ভাগ ডাক্তারই ডান-হাতি। তাঁরা যে অবস্থানে দাঁড়িয়ে অপারেশ করেন, এক্ষেত্রে সেটা করলে মুশকিলই হয়। হঠাৎ দিক বদল গেলে কাজ করতে চূড়ান্ত অসুবিধে হয়।


Siatus Inversus Totalis একটি বিরল রোগ, যা ১০ লাখ মানুষের মধ্যে একজনেরও কম মানুষের মধ্যে এই রোগ দেখা যায়। জন্ম থেকেই শরীরের ভেতরের সব কিছু উল্টো অবস্থায় থাকে। যেমন হার্ট থাকার কথা মানুষের বুকের বাম দিকে। কিন্তু এই রোগীর ক্ষেত্রে হার্ট রয়েছে বুকের ডান দিকে। এমনকী বৃহদান্ত্র থেকে অন্যান্য প্রত্যঙ্গও উল্টোদিকে অবস্থান। ঠিক যেন আয়নায় দেখা ছবি। 
নদিয়ার চাকদার বাসিন্দা আরতি গুহ চৌধুরী পেটে ব্যাথা ও রক্তপ্লতা নিয়ে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসেন। প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক পি কে মোহন্ত জানতে পারেন তাঁর অর্গানগুলির বিপরীত দিকে অবস্থানের বিষয়টি। বৃহস্পতিবার প্রায় ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিটের প্রচেষ্টায় ৭ সদস্যের চিকিৎসক দল বৃহদান্ত্রের বিরল অস্ত্রপচার করেন। যেহেতু সব কিছু শরীরের ভেতরে উল্টোদিকে সেহেতু অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ছিল অস্ত্রপ্রচার। আপাতত রোগিনী সুস্থ ও স্থিতিশীল। 


বিনা ব্যয়ে সরকারি হাসপাতালে এই চিকিৎসা পেয়ে খুশি রোগিনী ও তাঁর পরিবার। গত মাসেই এমন একটি অপারেশন হয়েছিল । হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ডাক্তাররা তাঁদের সুবিধাজনক বৃত্তের বাইরে গিয়ে উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে অপারেশনটি করেন। এমনকী বেশ কিছু পরীক্ষা করার সময়ও আয়না জাতীয় জিনিস লাগিয়ে বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়। এ ধরনের অপারেশন সত্যিই নজির সৃষ্টিকারী ।  


আরও পড়ুন : 


বর্ষার আগমন বার্তা স্পষ্ট, তবু এখনই ভারী বৃষ্টি নয় ! এই তারিখ থেকেই প্রবল বর্ষণ কলকাতায়