সুজিত মণ্ডল , নদিয়া : সীমান্তে নতুন নতুন বাঙ্কার তৈরি করছে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষা বাহিনী। বন্দুক তাক করে তারা বসে রয়েছে দিনভর। দাবি করেছিলেন মালদায় সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা। তার ছবিও এসেছিল সামনে। এবার প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের এক-দেড় কিলোমিটারে ধরা পড়ল এমনই ছবি। সীমান্তের কাছেই টুঙ্গি সীমান্তে চার-চারটি বাঙ্কারের হদিশ মিলল। তবে এ যে বাঙ্কার বোঝার উপায় নেই ! লোকজনের চোখে ধুলো দিতে আম বাগানের ভিতরে তৈরি হয়েছিল ঘর !
ছবি দেখলে চোখ কপালে উঠবে। মাটির ওপরে ঘর আর মাটির নীচে চুপিসাড়ে তৈরি করা হয়েছিল বাঙ্কার। তারই ভিতরে মিলেছে নিষিদ্ধ কাফ সিরাপ । ফেন্সিডিলের রাশি রাশি বোতল পাওয়া গিয়েছে তার মধ্যে। খবর পেয়ে মাজদিয়ার সুধীররঞ্জন লাহিড়ি কলেজের সামনে আম বাগানে BSF পুলিশের সঙ্গে যৌথ অভিযান চালায়। আর সেখানেই নজরে আসে এই বাঙ্কার । প্রশ্ন উঠছে, শুধুমাত্র নিষিদ্ধ কাফ সিরাপ পাচারের জন্যেই কি বাঙ্কার তৈরি করা হয়েছিল? না কি এতগুলি বাঙ্কার তৈরির পিছনে ছিল অন্য রহস্য? সমাধানের চেষ্টা করছে পুলিশ ।
BSF সূত্রে খবর, অপারেশন চালিয়ে চোরাচালান চক্রের পর্দাফাঁস হয়েছে। স্টোরেজ ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার হয়েছে ৬২ হাজার ২০০ বোতল ফেন্সিডিল।
যার বাজারমূল্য ১ কোটি ৪০ লক্ষ ৫৮ হাজার ৪৪৪ টাকা। সীমান্তবর্তী এলাকায় বাঙ্কারের হদিশ মেলায় আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা।
এই বিষয়ে প্রাক্তন সেনাকর্তা কর্নেল পৃথ্বীরঞ্জন দাস জানালেন, বাড়ির ভিতরে এই ধরনের লুকোনো বাঙ্কারকে বলা হয়, ডুয়াল পারপাস হাট। অর্থাৎ যা উপর উপর দেখতে মনে হবে, ওই বাড়িতে কেউ থাকছে। হয়ত সেখানে ভিতরে ভিতরে অবৈধ কার্যকলাপ চলছে। এই সব বাঙ্কারে চালানো হয় অবৈধ কারবার।
এই বাঙ্কারে খোঁজ মিলেছে প্রচুর কাফ সিরাপ। ওয়াকিবহাল মহলের সন্দেহ, এই সব বাঙ্কারে বিস্ফোরক রাখ হতে পারে। কারণ আন্ডার গ্রাউন্ডে খুব সিকিওর্ডভাবে এই বাঙ্কারগুলি তৈরি করা হয়েছে। বিস্ফোরকগুলো অল্প অল্প পরিমাণে এনে এখানে সম্পূর্ণভাবে মজুত করা হলে, তা লোকের চোখেও পড়বে না। তারপর সেগুলিকে বিভিন্ন নাশকতামূলক কাজে লাগানো হতে পারে। প্রজাতন্ত্র দিবসের ২ দিন আগে নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের মাজদিয়ায় ভারত-বাংলাদেশের টুঙ্গি সীমান্তের অদূরে চার-চারটি বাঙ্কারের হদিশ মেলায় ছড়িয়েছে আতঙ্ক।