সুদীপ চক্রবর্তী ও সমীরণ পাল, নদিয়া: এ যেন মধ্যযুগীয় বর্বরতা। তবে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রাজনৈতিক রঙ-ও। আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ফের সালিশি সভা ডেকে মোড়লদের মাতব্বরি। এক তরুণ-তরুণীকে মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধর করা হল সবার সামনে। দাঁড়িয়ে দেখলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মোড়লদের সামনে প্রতিবাদ করার সাহস পেলেন না কেউ। ভয়ঙ্কর এই দৃশ্য ভাইরাল হয়েছে সমাজ মাধ্যমে। 


ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উত্তর দিনাজপুরে চোপড়া ব্লকের লক্ষ্মীপুর এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, গ্রামের বাসিন্দা ওই যুগলের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক থাকায় সালিশি সভা ডাকা হয়। সেখানে ওই যুগলকে বেধড়ক মারধর করেন মোড়লরা। পুলিশ প্রশাসন থাকা সত্ত্বেও কেন আইন হাতে তুলে নিলেন তাঁরা? পুলিশ জানিয়েছে, স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করা হয়েছে। ভিডিও দেখে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। 


পুলিশ-প্রশাসন থাকা সত্ত্বেও কেন সালিশি সভা ডাকলেন তৃণমূলকর্মী কেন আইন হাতে তুলে নিলেন তিনি? প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক লিখেছেন, এটা শুধু সালিশি সভা নয়।  তৃণমূলের নেতৃত্বে জেসিবি নামে গুন্ডার মাধ্যমে বিচারের বুলডোজার। যে এই ভিডিওটি করেছে, তাকে ঘরছাড়া করা হয়েছে। রাজ্য পুলিশের সাহায্যে তৃণমূলের এটাই নিয়ম।


বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসন ব্যবস্থার কুৎসিত চেহারা। যে তৃণমূলকর্মী মারধর করেছেন, তিনি তাঁর 'ইনসাফ' সভার মাধ্যমে দ্রুত বিচার দেওয়ার জন্য বিখ্যাত এবং চোপড়া বিধায়ক হামিদুল রহমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি এই দানবের বিরুদ্ধে কাজ ব্যবস্থা নেবেন নাকি শেখ শাহজাহানের মতো পক্ষে দাঁড়িয়ে তাকে রক্ষা করবেন?  


আইন আছে। আদালত আছে। সেসব এড়িয়ে কীভাবে সালিশি সভা ডেকে মাতব্বরি করলেন তৃণমূলকর্মী? তা নিয়েই সমালোচনার ঝড় রাজ্যজুড়ে।


এদিকে, সল্টলেকে স্রেফ সন্দেহের বশে পিটিয়ে খুন। বেধড়ক মারধরের পর প্রায় সাড়ে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফেলে রাখা হয় রাস্তায়। 'স্টোনচিপের ওপর ফেলে পেয়ারা গাছের ডাল দিয়ে মারা হয়েছে', চোখের সামনে নাতির মৃত্যু দেখেছেন বলে দাবি মৃত প্রসেন মণ্ডলের ঠাকুমা ভাগ্যপতি মণ্ডলের। আটকাতে যাওয়ায় ঠাকুমাকেও মারধরের হুমকি। 'নাতি চুরি করলে পুলিশের হাতে তুলে দিতে বললেও কথা শোনেনি অভিযুক্তরা', এমনই অভিযোগ ঠাকুমার। প্রসেন মণ্ডলকে মোবাইল চোর সন্দেহে রাতভর মারধর করা হয় বলে অভিযোগ ঠাকুমার। 



আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে