সুজিত মণ্ডল, নদিয়া : কখনও সহকর্মী শিক্ষক (Assistant Teacher), কখনও বা মিড-ডে-মিলের (Mid Day Meal) কর্মীদের সঙ্গে অভব্য আচরণ, আবার কখনও সটান নিজেরই সকুলের ছাত্রীকে বিয়ে করতে চেয়ে তার মা-কে ফোন ! এমনই ভুরি ভুরি অভিযোগে নদিয়ার (Nadia) এক প্রাথমিক শিক্ষককে (Primary School Teacher) কোনও স্কুলেই পাঠানো হচ্ছে না। গত ৬ মাস অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসে বসেই বসেই বেতন পাচ্ছেন তিনি।
বিয়ে করতে চেয়ে ছাত্রীর মাকে সটান ফোন !
পঞ্চাশোর্ধ্ব শিক্ষক, তাঁরই স্কুলের এক চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে বিয়ে করতে চেয়ে ফোন করলেন ছাত্রীর অভিভাবককে ! সেকথা আবার মুখ ফুটে স্বীকারও করলেন ! অভিযুক্ত শিক্ষক পরিমলকুমার বাইন বলেছেন, 'হ্যাঁ, আমি ফোন করে বলেছিলাম ওই ছাত্রীর মাকে, আপনার মেয়েকে পছন্দ হয়, দেখুন দেওয়া যায় কি না'। এই কাণ্ড ঘটেছে নদিয়ার রানাঘাটের চিনাপুকুরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
স্কুলের একাধিক লোকের সঙ্গে অভব্য আচরণ
বছর ৫৭-র পরিমলকুমার বাইন ২০১৩ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে এই স্কুলে যোগ দেন। অন্যান্য শিক্ষক ও মিডডে মিলের কর্মীদের সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগে ২০১৯ সালে তাঁকে অন্য সকুলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ২ বছর পর আবার চিনাপুকুরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফিরে আসেন। তারপরই গত বছরের জুনে এই কাণ্ড ঘটান অভিযুক্ত শিক্ষক।
বসে বসেই বেতন !
ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে অভিযোগ জানান। ২০২২ সালের জুলাই মাসে অভিযুক্ত শিক্ষককে ওই স্কুল থেকে তুলে নেওয়া হয়। আর তারপর থেকেই গত ৬ মাস বসে বসে বেতন পাচ্ছেন তিনি। রানাঘাট-১ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসে অবশ্য রোজ হাজিরা দেন পরিমল। রানাঘাটের মহকুমা শাসক হারিস রশিদ বলেন, শিক্ষকের বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি কী ঘটেছে, তা দ্রুত খোঁজ নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে হাজার হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে। পাস করেও হকের চাকরির দাবিতে রাস্তায় আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন হাজার হাজার হবু শিক্ষক। তখন, রাজ্যেরই এক স্কুলে কোনও কাজ না করে বসে বসে বেতন পাচ্ছেন এক শিক্ষক! যদিও নিজের বিরুদ্ধে যাবতীয় অভিযোগ স্বীকার করে নেওয়ার পর অভিযুক্ত শিক্ষকের বক্তব্য এভাবে বসে বসে মাইনে পেতে ভাল লাগছে না।
আরও পড়ুন- 'মাস্টার খায় লেগপিস, পড়ুয়ারা পায় ছাঁট মাংস', নিম্নমানের মিড ডে মিল, তালাবন্দি শিক্ষকরা