আবির দত্ত ও প্রদ্যোৎ সরকার, কৃষ্ণগঞ্জ (নদিয়া): নদিয়ার (Nadia) কৃষ্ণগঞ্জে বিএসএফের (BSF) গুলিতে মৃত্যু হল এক পাচারকারীর। গরু পাচারে বাধা দিতে গেলে জওয়ানদের উপর ধারাল অস্ত্র নিয়ে চড়াও হয় পাচারকারীরা। পাল্টা গুলিতে মৃত্যু হয় পাচারকারীর। গরু পাচার মামলার তদন্তে উঠে পড়ে লেগেছে সিবিআই, ইডি- দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা। গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূলের বীরভূম জেলার সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। জেলবন্দি তাঁর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকেও হেফাজতে নিতে চেয়ে দফায় দফায় জেরা করছে ইডি।


ফের গরু পাচারের অভিযোগ: এই আবহে ফের সামনে এল গরু পাচারের অভিযোগ। সীমান্তে চলল গুলি। শনিবার তখন গভীর রাত। বিএসএফ সূত্রে খবর, নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের বিষ্ণুপুর বর্ডারে ১৫-২০ জন দুষ্কৃতী গরু পাচারের চেষ্টা করছিল। জওয়ানরা তাদের ধাওয়া করলে, ধারাল অস্ত্র ও লাঠি নিয়ে হামলা চালানো হয়। শূন্যে গুলি ছোড়েন বিএসএফ জওয়ানরা। তা সত্ত্বেও দুষ্কৃতীরা মারধর চালিয়ে যায়। পরিস্থিতি সামলাতে পাচারকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় বিএসএফ। 


বিএসএফের গুলিতে পাচারকারীর মৃত্যু: বিএসএফের গুলিতে এক পাচারকারীর মৃত্যু হয়। বাকিরা বাংলাদেশের দিকে পালায়। বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের মুখপাত্র জানিয়েছেন, পাচারকারীদের ছক ভেসতে যাওয়ায় তারা জওয়ানদের উপর হামলা চালায়। আগেও বহুবার জওয়ানরা গুরুতর আহত হয়েছেন। আত্মরক্ষার জন্য ও পাচার রুখতে কড়া পদক্ষেপ নেয় বিএসএফ। তার জন্য মাঝেমধ্যে পাচারকারীদের ভয়ঙ্কর পরিণতি হয়।


আটক গরু, মোষ বোঝাই ২২টি গাড়ি: অন্যদিকে পুরুলিয়ার হুড়া থেকে আটক গরু, মোষ বোঝাই ২২টি গাড়ি। উদ্ধার শতাধিক গবাদি পশু। বেশ কয়েকটি বাছুরের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় ৪০ জনকে গ্রেফতার করেছে হুড়া থানার পুলিশ। গতকাল গভীর রাতে হুড়ার হাটতলা এলাকায় গরু, মোষ বোঝাই গাড়ি আটক করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও তৃণমূল নেতা সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, পুলিশ ও বিজেপির আঁতাঁতে গরু পাচার চলছে। প্রশাসনকে জানানো সত্ত্বেও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ শাসক-নেতার। বিজেপির প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি। 


গরুপাচার মামলায় আপাতত তদন্ত করতে পারবে না রাজ্য পুলিশ


শুধু তাই নয়, গরুপাচার মামলায় রাজ্য় পুলিশের পৃথক তদন্ত নিয়ে রাজ্যের কাছে হলফনামাও চেয়েছে হাইকোর্ট। তাতে রাজ্যের তরফে সময় চাওয়া হলে, আদালত আগামী তিন সপ্তাহের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। আগামী ১৪ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি। সেখানেই এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আদালত জানিয়ে দেবে বলে জানা যাচ্ছে। 


বৃহস্পতিবার মামলার শুনানি চলাকালীন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ সাফ জানিয়ে দেয় যে, গরুপাচার মামলায় সিবিআই-এর কাজে কোনও রকম ব্যাঘাত ঘটানো যাবে না। রাজ্য পুলিশের তরফে এ নিয়ে আপাতত কোনও পদক্ষেপ বা তদন্ত করা যাবে না। তিন সপ্তাহ পর রাজ্যের হলফনামা পেলেই আদালত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিতে পারে। তবে আপাতত অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দিয়ে রাজ্য পুলিশের তদন্তপ্রক্রিয়া আটকে দিল আদালত।