কলকাতা : উত্তর দিনাজপুরের দাড়িভিটে গুলিতে ২০১৮-য় দুই জনের মৃত্যুর ঘটনায় এফআইআর দায়ের করল এনআইএ। এর পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নায় গত বছর বিজেপি বুথ সভাপতি খুনের অভিযোগের তদন্তেও এফআইআর এনআইএ-র। তদন্ত সংক্রান্ত সব নথি হস্তান্তর করুক রাজ্য পুলিশ ও CID, এই আবেদন করে নগর দায়রা আদালতের দ্বারস্থ হল NIA।


কী হয়েছিল দাড়িভিটে ?


২০১৮-র ২০ সেপ্টেম্বর, শিক্ষক নিয়োগ ঘিরে ছাত্র-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় উত্তর দিনাজপুরের দাড়িভিট ! মৃত্যু হয় রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মন নামে ২ প্রাক্তন ছাত্রের! পুলিশের গুলিতে তাঁদের মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। মৃতদের পরিবার প্রথম থেকেই CBI তদন্তের দাবিতে সরব থাকলেও, তদন্তভার CID-র হাতে দেয় রাজ্য সরকার। 


যদিও সেই তদন্তে সন্তুষ্ট হতে পারেনি মৃত দুই ছাত্রের পরিবার। উল্টে দুই ছাত্রের মৃতদেহ দাহ না করে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে নদীর ধারে সমাধিস্থ করে রাখা হয়। এই প্রেক্ষাপটে ২০২৩-এর ১০ মে, দাড়িভিটকাণ্ডে NIA তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। 


কী হয়েছিল ময়নায় ?


পঞ্চায়েত ভোটের আগে ময়নার বাকচা গ্রামে খুন হন বিজেপির বুথ সভাপতি বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়া। তাঁকে অপহরণ করে খুনের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ ও তথ্য় প্রমাণের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তভার NIA-কে দেওয়া যেতে পারে বলে মতপ্রকাশ করে হাইকোর্ট। তবে NIA-কে তদন্তভার দেওয়া হবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের ওপর ছাড়ে আদালত। গত বছরের অক্টোবরে কেন্দ্রের কাছে রিপোর্ট পাঠায় রাজ্য় সরকার। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে চিঠি লিখে হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকর করার সুপারিশ করেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলও। কিন্তু, তারপরেও এনিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়নি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত মন্তব্য় করেছিলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকর করতে কোনওরকম পদক্ষেপ করতে আগ্রহ দেখায়নি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এটা দুর্ভাগ্যের।


গত বছরের পয়লা মে খুন হন বাকচায় বিজেপির ২৩৪ নম্বর বুথের সভাপতি বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়া। গভীর রাতে বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে তাঁর দেহ মেলে। নিহতের পরিবারের তরফে ৩৪ জনের নামে অপহরণ করে খুনের অভিযোগে FIR দায়ের করা হয়। হাইকোর্টে রাজ্য় সরকার জানায়, মাথায় বুলেট বিঁধেই মৃত্যু হয়েছে বিজেপি কর্মী বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়ার।


এরপর খুনের মামলার সঙ্গে বিস্ফোরক আইন ও তপশিলি জাতি-উপজাতি সংক্রান্ত আইনের উপযুক্ত ধারা FIR-এ যুক্ত করার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। সময়সীমা বেঁধে এনআইএকে তদন্তভার নিয়ে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।