সন্দীপ সরকার, ঝিলম করঞ্জাই ও দীপক ঘোষ, কলকাতা: হাসপাতালে খাদির তৈরি পোশাক, বিছানার চাদর ও অন্যান্য সামগ্রীর ব্যবহার নিয়ে সব রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরকে অ্যাডভাইসরি পাঠাল জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন। যার বিরোধিতায় সরব হয়েছে একাধিক চিকিত্‍সক সংগঠন। যদিও কমিশনের দাবি, খাদির সামগ্রীর বিক্রি বাড়ানোর জন্যই এই নির্দেশিকা।


কী নির্দেশিকা?
জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন সরকারি হাসপাতালে খাদির তৈরি বিছানার চাদর ও বালিশের কভার, অ্যাপ্রন, রোগীদের গাউন, সাবান, হ্যান্ড-ওয়াশ ব্যবহারের জন্য অ্যাডভাইসরি পাঠাল সব রাজ্যকে। সেইসঙ্গে বলা হয়েছে, কর্তব্যরত চিকিত্‍সকদের খাদির তৈরি সাদা অ্যাপ্রন পরতে হবে। এই সুপারিশ ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। সুপারিশে বলা হয়েছে, পরিবেশবান্ধব খাদির তৈরি সামগ্রীর বিক্রি বাড়ানোর উদ্দেশ্যে এই পদক্ষেপ। প্রশ্ন উঠেছে, খাদির তৈরি সামগ্রীর বিক্রি বাড়ানোর জন্য রেল বা অন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের সুপারিশ করা হচ্ছে না কেন? 


উঠছে অভিযোগ:
অভিযোগ, এইভাবে নির্দেশিকা দিয়ে জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন বারবার কেন্দ্রীয় সরকারের এজেন্ডা - উগ্র জাতীয়তাবাদের আবেগকে প্রমোট করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কে কী পরবে, কোন হাসপাতাল কী ব্যবহার করবে, সে বিষয়ে সরকারিভাবে নিদান দেওয়া যায় কি না সেই প্রশ্নই তোলা হয়েছে। এ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও।  তৃণমূল ও বিজেপি একে অপরের বিরুদ্ধে কটাক্ষ করেছে।


রাজ্যের কী সিদ্ধান্ত:
জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনের এই নির্দেশিকা প্রসঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। সরকার সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত রাজ্যে ওই সুপারিশ কার্যকর হবে না।  


এ বছরই জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন এমবিবিএস পাস করার পর চিকিৎসকদের হিপোক্রেটিস ওথ-এর বদলে চরক শপথ পাঠ করানোর প্রস্তাবে সিলমোহর দেয়। অভিযোগ ওঠে, চরক শপথ স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে গৈরিকীকরণের চেষ্টা। এবার খাদি ব্যবহারের নির্দেশিকা নিয়েও একই অভিযোগ উঠছে।


আরও পড়ুন: মাটিতে চাপা পড়ছে নিকাশিও, আতঙ্কে জেলাশাসকের দ্বারস্থ বাসিন্দারা