কলকাতা : দিনটা ছিল এগারোই সেপ্টেম্বর৷ ১৮৯৩ সাল৷ হিন্দুধর্মের প্রতিনিধি হিসেবে সেদিন বক্তৃতা শুরু করেন বিবেকানন্দ৷ তাঁর বক্তৃতা জুড়ে ছিল মানবধর্মের কথা৷ পাশ্চাত্যের মনে শুধু হিন্দু ধর্মই নয়, ভারতবর্ষ সম্বন্ধে এক নতুন ধারনা তৈরি করে দিয়েছিলেন স্বামীজি৷ শিকাগোয় স্বামীজি সেদিন বলেছিলেন সহনশীলতার কথা৷ শান্তির কথা৷ পরামর্শ দিয়েছিলেন, সেই পথে হাঁটার যে পথে হাঁটলে পৃথিবীটা আরও সুন্দর হয়ে উঠবে৷ এভাবেই তাঁর বহু বাণী আমাদের চলার পথের পাথেয়।
১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের জন্মবার্ষিকী। তার প্রাক্কালে পড়ুন বীর সন্ন্যাসীর এমন কিছু বাণী যা আমাদের উদ্বুদ্ধ করে ।
- “সাম্প্রদায়িকতা, গোঁড়ামি আর এই দুইয়ের ভয়ঙ্কর সৃষ্টি, মতান্ধতা, এই সুন্দর পৃথিবীকে অনেক দিন আগেই দখল করেছে। হিংসায় পৃথ্বী পূর্ণ করেছে, মানব-শোণিতে ভিজিয়েছে বসুধা, ধ্বংস করেছে সভ্যতা, গোটা নেশন-কে করে দিয়েছে হতাশ্বাস।”
- '' জগৎ উচ্চ উচ্চ নীতির জন্য আদৌ ব্যস্ত নয়, তারা চায় ব্যক্তি! তারা যাকে পছন্দ করে, তার কথা ধৈর্যের সহিত শুনবে, তা যতই অসার হউক না কেন- কিন্তু যাকে তারা পছন্দ করে না, তার কথা শুনবেই না। এইটি মনে রেখো এবং লোকের সহিত সেই মতো ব্যবহার করো।... যদি শাসন করতে চাও সকলের গোলাম হয়ে যাও। এই হল আসল রহস্য। ''
- '' আমার আদর্শ বস্তুতঃ অতি সংক্ষেপে প্রকাশ করা চলে, আর তা মানুষের কাছে তার অন্তর্নিহিত দেবত্বের বাণী প্রচার করতে হবে এবং সর্বকার্যে সেই দেবত্ব - বিকাশের পন্থা নির্ধারণ করে দিতে হবে। ''
- ''সামাজিক বা রাজনীতিক সর্ববিধ বিষয়ে সফলতার মূলভিত্তি - মানুষের সততা। পার্লামেন্ট কর্তৃক বিধিবদ্ধ কোন আইন দ্বারা কখনও জাতি উন্নত বা ভাল হয় না, কিন্তু সেই জাতির অন্তর্গত লোকগুলি উন্নত ও ভাল হইলেই জাতিও ভাল হইয়া থাকে। ''
- '' আমাদের এমন ধর্ম চাই, যাহা আমাদিগকে মানুষ করিতে পারে। আমাদের এমন সব মতবাদ আবশ্যক, যেগুলি আমাদিগকে মানুষ করিয়া গড়িয়া তোলে। যাহাতে মানুষ গঠিত হয়, এমন সর্বাঙ্গসম্পূর্ণ শিক্ষার প্রয়োজন।''
- '' যতক্ষণ মানুষ প্রকৃতিকে অতিক্রম করিবার জন্য সংগ্রাম করে, ততক্ষণ তাহাকে যথার্থ 'মানুষ' বলা চলে। এই প্রকৃতির দুই রূপ - অন্তঃপ্রকৃতি ও বহিঃপ্রকৃতি।''
- ‘‘যে ভাল রাঁধতে পারে না, সে ভাল সাধু হতে পারে না। কারণ, মন শুদ্ধ না হলে রান্না সুস্বাদু হয় না!’’
সূত্র - স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা সমগ্র