আশাবুল হোসেন, কলকাতা: রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়, মূলত জঙ্গলমহল এবং ডুয়ার্স এলাকায় বারবার সামনে আসে হাতি-সমস্যা। বিভিন্ন সময় লোকালয়ে চলে আসে হাতি (Elephant)। খাবারের খোঁজে ফসল ভর্তি মাঠে ঢুকে যায় হাতির দল। অনেকসময় যেমন হাতির মৃত্যু ঘটে। তেমনই ঘটে মানুষের মৃত্যুও। এই সমস্যা রুখতেই এবার নজর দিচ্ছে বন দফতর। তৈরি করা হয়েছে একটি বাহিনী, নাম গজমিত্র বাহিনী। হাতির অবস্থান জানতে আধুনিক পরিকাঠামোরও সাহায্য নিচ্ছে বন দফতর। আনা হচ্ছে নতুন অ্যাপ। 


কখনও হাতির হানায় বাড়ি-ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কখনও হাতির হানায় কোনও বাসিন্দার মৃত্য়ু হয়েছে। কখনও আবার রেললাইনে হাতির মৃত্যু। এমন ঘটনায়, অনেকসময় স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ-বিক্ষোভের মুখেও পড়তে হয় বনকর্মীদের। এই পরিস্থিতি সামলাতে হাতির সমস্যার সমাধান করতে এবার বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে বন দফতর।  হাতিদের রক্ষা করতে আনা হচ্ছে বিশেষ অ্যাপ।


হাতির আনাগোনা:
ঝাড়খণ্ডের জঙ্গল থেকে প্রায়শই হাতির পাল এ রাজ্যে ঢুকে পড়ে।  বন দফতর সূত্রে খবর, সম্প্রতি পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম-এলাকায় হাতির হানা বাড়ছে। আবার নেপাল থেকেও উত্তরবঙ্গে(North Bengal) ঢুকছে হাতি। বারবার খাবারের খোঁজে লোকালয়ে হানা দিচ্ছে হাতির দল। প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ঘরবাড়ি, ফসল।


গজমিত্র বাহিনী:
এই আবহে এবার মাঠে নামবে রাজ্য বন দফতরের (Forest Department) গজমিত্র বাহিনী। সূত্রের খবর, প্রাথমিকভাবে দক্ষিণবঙ্গে ৬০০ কর্মী নিয়োগ করা হবে। তাঁদের বেতন হবে ১২ থেকে ১৫ হাজার। দেওয়া হবে অ্যান্ড্রয়েড ফোন। বিষয়টি নিয়ে জানিয়েছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।


বিশেষ অ্যাপ:
উত্তরবঙ্গে বেশ কিছু জায়গায় হাতি করিডর দিয়ে ট্রেন চলাচল করে। গতি নির্দিষ্ট করা থাকলেও, অনেক সময় ট্রেনের ধাক্কায় হাতি'র মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। এই পরিস্থিতিতে হাতির মৃত্যু রুখতে এবার বিশেষ অ্যাপ আনছে রাজ্য বন দফতর ও রেল কর্তৃপক্ষ। বনাঞ্চল সংলগ্ন স্টেশনগুলির স্টেশন মাস্টার, লোকো পাইলট ও ফরেস্ট অফিসারদের কাছে থাকবে এই অ্যাপ। এর মাধ্যমে হাতির গতিবিধি জানা যাবে। ফলে রেললাইনে বা তার কাছাকাছি জায়গায় হাতি থাকলে আগে থেকেই ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে। 


হাতি-মানুষ সংঘর্ষ (Man Elephant Conflict) নিয়ে বারবার আলোচনা হয়েছে। হাতির প্রাণ বাঁচানোর পাশাপাশি, জঙ্গল লাগোয়া, হাতি করিডর লাগোয়া এলাকায় বাসিন্দারাও যাতে নিরাপদ থাকেন। তার জন্যও বারবার নানা পদক্ষেপ করা হয়েছে। তবুও মৃত্যু এড়ানো যায়নি। এবার নতুন আরও একটি পদক্ষেপ। তাতে সমস্যার সমাধান হয় কিনা, বলবে সময়।