রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: খারিজ হল পুলিশের আবেদন। জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) অ্যাম্বুল্যান্সকাণ্ডে জামিন পেলেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার অঙ্কুর দাস। কোনও প্রভাবশালীর ইন্ধনে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। আইন আইনের পথেই চলবে। অঙ্কুরের অভিযোগ উড়িয়ে পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছে অ্যাম্বুল্যান্স চালক সংগঠন।
অ্যাম্বুল্যান্সকাণ্ডে জামিন: জলপাইগুড়ি অ্যাম্বুল্যান্সকাণ্ডে মা হারা সন্তানকে সাহায্য করে গ্রেফতার হয়েছিলেন স্বেচ্ছাসেবী কর্ণধার সদস্য। রবিবার তাঁকে জামিন দিল জলপাইগুড়ি জেলা আদালত। আর জামিন পেয়েই বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন অঙ্কুর দাস। এদিন তিনি বলেন, 'সত্যের জয়, আমি দোষ করিনি, মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। প্রকৃত দোষীদের আড়াল করতেই ষড়যন্ত্র করে আমাকে গ্রেফতার করা হয়। হাজার টাকার ভাড়া যাঁরা ৩ হাজার টাকা নিচ্ছে, তাঁদের কেন গ্রেফতার করা হল না? অমানবিক আচরণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে আমাকে কেন গ্রেফতার? এর পিছনে প্রভাবশালীর হাত রয়েছে।'
৫ জানুয়ারি, জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে মৃত্যু হয় ক্রান্তির বাসিন্দা লক্ষ্মীরানি দেওয়ানের। তাঁর স্বামীর অভিযোগ, স্ত্রী-র মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে যেতে সরকারি হাসপাতাল থেকে কোনও সাহায্য পাননি। এমনকি, ৩ হাজার টাকা ভাড়া দিতে না পারায়, মৃতদেহ নিয়ে যেতে রাজি হননি বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চালকরাও। শেষে মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বাড়ির দিকে রওনা দেন বাবা ও ছেলে। সেই সময় এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার অঙ্কুর দাস ওই পরিবারকে মৃতদেহ নিয়ে যেতে শকটের বন্দোবস্ত করে দেন। পরদিনই অঙ্কুরের বিরুদ্ধেই থানায় অভিযোগ দায়ের করে অ্যাম্বুল্যান্স চালক সংগঠন। যার প্রেক্ষিতে পুলিশ অঙ্কুর দাসকে গ্রেফতার করে, ৪ দিনের জন্য হেফাজতে পায়।
এদিন জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে অঙ্কুর দাসকে আরও ৫ দিনের জন্য হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানায় পুলিশ। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ তোলেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যের আইনজীবীরা। যদিও পুলিশের আর্জিতে মান্যতা দেননি বিচারক। শর্তসাপেক্ষে অঙ্কুর দাসের অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করে আদালত। অঙ্কুর দাসের আইনজীবী সৌজিৎ সিংহ বলেন, “যে ধারা দিয়েছে, তার সঙ্গে কেসের কোনও মিল নেই। অতি সক্রিয় হয়েছে পুলিশ। বলির পাঁঠা করেছে অঙ্কুর দাসকে।’’
এদিকে, জামিন পাওয়ার পরে অঙ্কুরের অভিযোগ, বিনামূল্যে দুঃস্থ মানুষকে সাহায্য করেন বলেই তাঁকে জেল খাটানো হয়েছে। অঙ্কুর বলেন, “আমরা করোনার সময় থেকে ফ্রি-তে সার্ভিস দিই, তাই জন্য চক্ষুশূল।’’এদিকে, জলপাইগুড়ি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, অ্যাম্বুল্যান্সকাণ্ডে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ৩ কর্মীর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। রিপোর্ট পাওয়ার পরে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।
আরও পড়ুন: Kolkata News: গঙ্গার ধারে সেলফি তুলতে গিয়ে নিখোঁজ, ৯ দিন পর উদ্ধার ছাত্রের দেহ