আবির দত্ত, দীপক ঘোষ ও কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, বীরভূম : ভোটের আগে এলাকায় সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরির করার জন্যই মজুত করা হয়েছিল বিস্ফোরক। বীরভূমের (Birbhum) লোকপুরে তৃণমূলকর্মীর (TMC) বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনায়, চার্জশিটে (ChargeSheet) এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করল NIA। যা নিয়ে শাসকদলকে আক্রমণ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। জবাব দিয়েছে শাসকদল।


NIA-র চাঞ্চল্যকর দাবি


ED,CBI, এই দুই কেন্দ্রীয় এজেন্সির তৎপরতা ঘিরে এমনিতেই উত্তাল বঙ্গ রাজনীতি। এরইমধ্যে বাংলার একটি ঘটনা প্রসঙ্গে চাঞ্চল্যকর দাবি করল আরেক কেন্দ্রীয় এজেন্সি NIA। নির্বাচনের আগে সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করতেই বোমা মজুত রাখা হয়েছিল তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে। বীরভূমের লোকপুর বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রথম চার্জশিটে এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করল ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি বা NIA। আর এই তথ্য সামনে আসার পরই তৃণমূলের সমালোচনায় মুখর হয়েছে বিরোধীরা। 


ঠিক কী ঘটেছিল


২০১৯’এর ২০ সেপ্টেম্বর বীরভূমের লোকপুরের বাসিন্দা তৃণমূল কর্মী বাবলু মণ্ডলের বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, তৃণমূলকর্মীর বাড়ির টিনের চালা উড়ে যায়! প্রথমে লোকপুর থানার পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করলেও, পরবর্তীকালে তদন্তভার হাতে নেয় রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থা CID। 


NIA তদন্ত


এরপর ২০২১’এ এই মামলার তদন্ত করতে চেয়ে মামলা করে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি বা NIA। পরবর্তীকালে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত শুরু করে তারা। সোমবার নগর দায়রা আদালতের বিশেষ NIA কোর্টে সেই মামলারই প্রথম চার্জশিট জমা পড়ল। NIA’র দেওয়া ১১০ পাতার চার্জশিটে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে বাবলু মণ্ডলের বাড়িতে বিস্ফোরক মজুত করা হয়। সেখানেই বোমা তৈরি করা হচ্ছিল। ২০২০ সালে পুলিশ যখন এই মামলার তদন্ত করতে যায়, তখনও বাবলু মণ্ডলের বাড়ি থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছিল। চার্জশিটে NIA দাবি করেছে, নির্বাচনের সময় এলাকায় সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করতেই বোমা মজুত করা হয়েছিল। 


অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মীরা


NIA’র চার্জশিটে তিনজনের নাম রয়েছ। বাবলু মণ্ডল, নিরঞ্জন মণ্ডল এবং মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল এরা তিনজনেই তৃণমূল কর্মী। এর মধ্যে বাবলু মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হলেও, পরে তিনি জামিন পান। অন্যদিকে বাকি দু’জনকে চার্জশিটে পলাতক হিসেবে দেখানো হয়েছে। ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয় রাজ্যে। NIA সূত্রে দাবি, সেইসময় থেকেই বিস্ফোরকগুলি মজুত করা শুরু হয়েছিল। এই মামলায় ৫০ জনেরও বেশি বয়ান নিয়েছে NIA।