পার্থপ্রতিম ঘোষ, আবির দত্ত, কলকাতা : নিক্কো পার্কের ভিতর ওয়াটার পার্কে নায়াগ্রা ফলসের সামনেই আচমকাই জ্ঞান হারান যুবক। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাহুল নামের ওই যুবককে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।  

নিক্কো পার্ক-কাণ্ডে এবার সামনে এল ঘটনার CC ক্যামেরার ফুটেজ। সেখানে দেখা গিয়েছে, দুপুর ১টা ৯-এ অসুস্থ তরুণকে চ্যাংদোলা করে নামাচ্ছেন তাঁর বন্ধুরা। নামাতে অসুবিধা হওয়ায় মাঝে একবার জলের মধ্যেই রাহুলকে শুইয়ে দেওয়া হয়। বন্ধুদের মধ্যে একজনকে CPR দিতে দেখা যায়। এরপর ১টা ১৩-য় নিয়ে আসা হয় হুইল চেয়ার। হুইল চেয়ারে বসানো হয় রাহুলকে। ১টা ২৩ মিনিটে অ্যাম্বুল্যান্সে তোলা হয় তরুণকে। দুপুর ১টা ২৪ মিনিটে নিক্কো পার্ক থেকে বেরিয়ে যায় অ্যাম্বুল্যান্স। 

নিক্কো পার্কে তরুণের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা। নিক্কো পার্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিধানননগর দক্ষিণ থানায় অভিযোগ। গাফিলতির অভিযোগ মৃত রাহুল দাসের পরিবারের। 'নিক্কো পার্ক কর্তৃপক্ষের কাছে আপৎকালীন সাহায্য চাওয়া হয়', কিন্তু, কোনও সাহায্য পাওয়া যায়নি, জানিয়েছেন রাহুলের বন্ধুরা, খবর পুলিশ সূত্রে। 'একজনই চিকিৎসক থাকেন নিক্কো পার্কে। গতকাল তাঁর ডে-অফ ছিল। চিকিৎসক না থাকলেও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স ছিলেন, তিনি দেখেছেন।' এমনটাই জানিয়েছে নিক্কো পার্ক কর্তৃপক্ষ। গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নিক্কো পার্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর। তবে ইতিমধ্যেই নিক্কো পার্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে বিধাননগর দক্ষিণ থানা। 

পরিবারের তরফে দায়ের হয়েছে লিখিত অভিযোগ। তাঁদের অভিযোগ, এই গোটা ঘটনা গাফিলতির কারণে হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চাইছেন মৃত যুবকের পরিবার। এই তদন্তের আওতায় সকলকে রাখা হোক, চাইছেন মৃতের পরিবারের সদস্যরা। বন্ধুর জন্মদিন পালন করতে গিয়েছিলেন যুবক। সেখানেই সব শেষ হয়ে গিয়েছে। মৃতের বাবা জানিয়েছেন, 'ছেলেরা বন্ধুরা বলেছে সাহায্য চেয়েও কিছুই পাওয়া যায়নি। অক্সিজেনের ব্যবস্থা ছিল না। ছিলেন না চিকিৎসকও। বন্ধুরা সিপিআর দেওয়ার চেষ্টা করে, ছেলেকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। কিন্তু কিছুই করতে দেয়নি ওখানকার লোকজন। ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার স্ট্রেচারটুকুও ছিল না। ওদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোনও ব্যবস্থা নেই, পরিষেবা নেই। সকাল থেকে বলছে অতিথি এসেছিল। তাঁদের জন্য এত ব্যবস্থা। সাধারণ মানুষের জন্য কিছু নেই? কোটি কোটি টাকা নেয় এরা। অথচ কিচ্ছু পরিষেবা দেয় না।' পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের পায়ে একটি ক্ষত ছিল। কীভাবে এই ক্ষত হল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে মৃতের বন্ধুদের। মৃত যুবকের বাবা বারবার বলেছেন, 'অক্সিজেনের ব্যবস্থা ছিল না। ওর বন্ধুরা চেঁচিয়ে সাহায্য চাইছিল। কোনও সাহায্য করেনি কেউ।' রাহলের বন্ধুরাই হুইলচেয়ার নিয়ে আসে। তারপর তাঁকে নিয়ে হাসপাতালে দিকে যায় তাঁরা।