সন্দেশখালি: উত্তপ্ত সন্দেশখালি। সেখানে নারী নির্যাতনের অভিযোগে আজ পথে নেমেছে বিজেপি। এনিয়ে জেলায় জেলায় বিক্ষোভ, থানা ঘেরাও কর্মসূচি চলছে গেরুয়া শিবিরের। এই আবহেই এবার শেখ শাহজাহান বাহিনীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগেও সরব হলেন গ্রামবাসী।


স্থানীয় এক মহিলা বলেন, 'নারীদের ওপর অত্যাচার করত। ঘরের মেয়েদের টেনে নিয়ে যেত। রাত ১২টা-১টা কোনও ঠিক নেই। মেয়েরা না গেলে, পুরুষদের তুলে নিয়ে যেত। উত্তম সর্দার , শিবু হাজরারা এসব করতো। এরকম নারী নির্যাতন যেন না হয়। আমরা শান্তি চাই।'


অপর এক মহিলা বলেন, 'আমরা যেমন শান্তিপূর্ণভাবে সন্দেশখালিতে ছিলাম, সেরকম শান্তিতে থাকতে চাই। আতঙ্কে রাতে ঘুমাতে পারি না। বাচ্চাদের ঘুমিয়ে দিয়ে আমরা জেগে থাকি। এটা অনেকদিন থেকে হচ্ছে। আমাদের স্বামীদের হুমকি দিচ্ছে। মিটিং-মিছিলে না গেলে সাদা থান ধরিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। এরকম অত্যাচার করছে। আমরা প্রশাসনকে জানাতাম। কোনও আস্থা পাইনি। মহিলাদের বলবে, মিটিংয়ে যেতে হবে। রাত ১২টায় যেতে হবে, রাত ১০টায় যেতে হবে। ওমুক জায়গায় ১০টার পরে বাইকে করে নিয়ে যাবে। আমি যাইনি। আমার জায়েরা গেছে। আমার বাচ্চা কোলে। কি মিটিং জানি না।'


সন্দেশখালিতে মহিলাদের ওপর অত্যাচারের অভিযোগে জেলায় জেলায় বিজেপির বিক্ষোভ কর্মসূচি। পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলের ঊষা গ্রামে টায়ার জ্বালিয়ে জিটি রোড অবরোধ করেন বিজেপি যুব মোর্চার সদস্যরা। পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। আধঘণ্টা পর পুলিশ গিয়ে অবরোধকারীদের তুলে দেয়।


হাওড়ার গোলাবাড়ি থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি মহিলা মোর্চার সদস্যরা। নেতৃত্বে মহিলা মোর্চার রাজ্য সভাপতি নেত্রী ফাল্গুনি পাত্র। হাওড়ার ব্যাঁটরা থানার সামনেও চলে বিক্ষোভ, পথ অবরোধ। অন্যদিকে, হুগলির  শ্রীরামপুর ও চুঁচুড়ায় বিক্ষোভ দেখান বিজেপি যুব মোর্চার সদস্যরা। শ্রীরামপুরের নগা মোড়ে জিটি রোড অবরোধ করা হয়। চুঁচুড়া থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি যুব মোর্চা।


এদিকে সন্দেশখালিতে পুলিশের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীর বাড়ি ভাঙচুর, মহিলাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও গালিগালাজের অভিযোগও উঠেছে। ভাঙচুরের সেই ছবি ভাইরালও হয়। অভিযোগ ওঠে, গত পরশু রাত ৩টে নাগাদ সন্দেশখালির খুলনা গ্রাম পঞ্চায়েতের শীতলিয়া এলাকায় হানা দেয় পুলিশ। গ্রামে পুলিশ বাহিনী তাণ্ডব চালানোর পাশাপাশি, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বলে গ্রামবাসীর অভিযোগ। যদিও পুলিশের দাবি, শিবু হাজরার পোলট্রি ফার্মে ভাঙচুর ও আগুন লাগানোর ঘটনায় এক অভিযুক্তকে ধরতে গতকাল ভোরে শীতলিয়া এলাকায় গেলে তারাই বাধার মুখে পড়ে। অভিযুক্তের খোঁজ মেলেনি। ভাঙচুরেরও কোনও ঘটনা ঘটেনি বলে পুলিশের দাবি।