রঞ্জিত সাউ, বিধাননগর : নিত্যনতুন প্রতারণার ফাঁদ লেগেই রয়েছে রাজ্যে ! এবার প্রভিডেন্ট ফান্ড সংস্থার (Provident Fund) কর্মীর পরিচয় দিয়ে বৃদ্ধাকে পেনশনের (Pension) প্রলোভন ও পরে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল। ঘটনায় বাঁকুড়া থেকে এক জনকে গ্রেফতার করল বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ (Bidhannagar Cyber Crime Police)।


পুলিশ সূত্রে খবর, ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে বিধাননগর কমিশনারেট এলাকার অন্তর্গত বাসিন্দা এক বৃদ্ধা বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় এসে এনিয়ে অভিযোগ করেন। অভিযোগে বৃদ্ধা জানান, তিনি একটি ফোন কল পান যেখানে তাঁকে প্রভিডেন্ট ফান্ড সংস্থার কর্মী পরিচয় দিয়ে শ্বেতা সিং নামে একজন ফোন করে। তাঁকে পেনশন দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। এরপর অনেকে তাঁকে ফোন করে একই প্রতিশ্রুতি দিলে তিনি তাদের বিশ্বাস করতে শুরু করেন। সেই বিশ্বাসের ভিত্তিতেই নিজের ফোনের অ্যাকসেস দিয়ে দেয় অভিযুক্তদের। এরপর তিনি দেখতে পান, তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ২ লক্ষ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ করেন ওই বৃদ্ধা।


ঘটনার তদন্ত শুরু করে বিধানননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। খবর পেয়ে বাঁকুড়া জেলার পাত্রসায়র এলাকায় হানা দিয়ে অভিযুক্ত অরিন্দম পালিতকে গ্রেফতার করে। তার কাছ থেকে একটি আধার কার্ড, অপরাধে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন এবং দু'টি ডেবিট কার্ড উদ্ধার করেছে পুলিশ।


এই চক্রের সঙ্গে আর কারা জড়িত , সেই বিষয়ে তদন্ত করে দেখছে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ।


এদিকে মোটা টাকার বিনিময়ে রেলের গ্রুপ C ও গ্রুপ D পদে চাকরির টোপ দেওয়ার অভিযোগ। রেলের ক্রাইম ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চের দেওয়া খবরের ভিত্তিতে বড়সড় প্রতারণা চক্রের (Fraud Racket) পর্দাফাঁস করল বর্ধমান RPF। ঘটনায় চক্রের মূল পান্ডা-সহ ৭ জনকে গ্রেফতার (Arrested) করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে বর্ধমান রেলওয়ে ইনস্টিটিউটে অভিযান চালিয়ে আরপিএফের অফিসাররা তাদের গ্রেফতার করেন। পাশাপাশি ঘটনাস্থলে উপস্থিত চার চাকরিপ্রার্থীকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বর্ধমান রেল স্টেশনের আরপিএফ পোস্টে নিয়ে আসা হয়।


RPF- সূত্রে জানা যায়, ক্রাইম ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ (CIB) মারফত বর্ধমানে একটি ভুয়ো চাকরি চক্রের খবর মেলে। তার ভিত্তিতে মঙ্গলবার দুপুর প্রায় সাড়ে ১২টা থেকে বর্ধমান রেলওয়ে ইনস্টিটিউটের ওপর নজরদারি শুরু করে আরপিএফের একটি স্পেশাল টিম। হলের দরজা বন্ধ করে ভিতরে যখন অভিযুক্তরা প্রার্থীদের ট্রেনিং দেওয়ার নামে নিজেদের কাজকর্ম করছিল, সেইসময় আরপিএফের আচমকা অভিযানে অভিযুক্তরা হকচকিয়ে যায়। টেবিলে রাখা বেশ কিছু নথি সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু আরপিএফের অফিসারদের তৎপরতায় হল ঘরের ভিতরে উপস্থিত ৭জন প্রতারক ধরা পড়ে। তাদের সঙ্গে থাকা সমস্ত নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়। রেলের গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি পদে চাকরির টোপ দিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য এদিন বর্ধমানের রেলওয়ে ইনস্টিটিউট ভাড়া করে আউশগ্রাম, বুদবুদ ও কেতুগ্রাম থেকে আসা বেশ কয়েকজন চাকরিপ্রার্থীকে একত্রিত করা হয়েছিল। রেলের গ্রুপ ডি ও সি পদের চাকরির জন্য ৫ লক্ষ টাকা করে দাবি করেছিল ধৃতরা। সেই মতো অনেকেই গত এক বছরে ধাপে ধাপে প্রায় এক লক্ষ টাকা করে প্রতারকদের মিটিয়েছেন বলেও জানা যাচ্ছে।