সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: বনগাঁর (Bangaon) জয়ন্তীপুর সীমান্ত (Indo Bangladesh Border) থেকে ৯৯টি গুলি উদ্ধার করল পুলিশ। হালেই চোরাকারবারি (Smuggler) সন্দেহে দু'জনকে আটক করেছিল বিএসএফ (BSF)। তাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ (Interrogation) শুরু করে পুলিশ। তারই মধ্যে ২ জনকে নিয়ে জয়ন্তীপুর কাঁটাতারের জিরো পয়েন্ট থেকে ৯৯টি গুলি উদ্ধার করেন তাঁরা।


কী জানা গেল?
হালেই বনগাঁর জয়ন্তীপুর সীমান্ত থেকে ৪১ টি তাজা কার্তুজ পাচারে জড়িত সন্দেহে দুজনকে আটক করেছিল বিএসএফ। সেই ঘটনার তদন্ত নেমেই ওই দুজনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। তার পরই গুলি উদ্ধারের ঘটনা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গিয়াসউদ্দিন মন্ডল এবং মোহাম্মদ নাজির হোসেন মোল্লাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে তদন্তকারীরা জানতে পারেন ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের জিরো পয়েন্ট এলাকায় আরও কার্তুজ লুকিয়ে রাখা হয়েছে। গত কাল পেট্রাপোল থানার পুলিশ দুই চোরাকারবারীকে সঙ্গে নিয়ে ৯৯ টি গুলি উদ্ধার করে। একই ঘটনায় আরও তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের নাম শাহাজাহান সর্দার, জীবন কর ও তাপস খাঁ। এই বিষয়ে বনগাঁ মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অর্ক পাঁজা বলেন 'ধৃত তিনজনের মধ্যে তাপস খাঁকে তিন দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানিয়ে বনগাঁ মহকুমা আদালতে পাঠানো হয়েছে।'


কী ভাবে ধরা পড়ে ২ 'চোরাকারবারি'?
দিনতিনেক আগের ঘটনা। সীমা চৌকি জয়ন্তীপুরের কর্তব্যরত জওয়ানরা সেদিন কাঁটাতারের দু'পাশে তাজা কার্তুজ ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেখতে পেয়ে এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি শুরু করেন। প্রথমে কিছু পাওয়া যায়নি। তাই জয়ন্তীপুর সীমান্ত চৌকি এলাকায় লাগানো গোপন ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করা হয়। তাতেই লাগোয়া ৩৬ ঘড়িয়া গ্রাম থেকে কাটাতারের সামনে দু'জনের গতিবিধি ধরা পড়ে।  বিএসএফ গোয়েন্দা সূত্রে খবর, এঁরাই গিয়াসউদ্দিন মণ্ডল এবং মোহাম্মদ নাজির হোসেন মুল্লা। ক্যামেরায় তাঁদের দেখা মিলতেই বিএসএফের একটি তল্লাশি দল গিয়াসউদ্দিন মন্ডলকে তার বাড়ির কাছে থেকে আটক করে। শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। বিএসএফের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করেছে যে, মোহাম্মদ নাজির হোসেন মোল্লার সঙ্গে এই ঘটনায় সে জড়িত ছিল। আরও জানায়, নাজিরের নির্দেশেই সে কৃষকের ছদ্মবেশে ওই এলাকায় বিএসএফ জওয়ানদের গতিবিধি সর্বক্ষণ নজরদারি করছিল। সেই সময়ই, নাজির একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে তাজা কার্তুজ নিয়ে কাটাতার পেরোনোর চেষ্টা করে দাবি গিয়াসউদ্দিনের। কিন্তু থলিটি কাঁটাতারের মধ্যে আটকে গিয়ে ফেটে যায়। যার ফলে সমস্ত তাজা কার্তুজ দু'পাশে ছড়িয়ে পড়ে। বিএসএফের ভয় পেয়ে এর পরই দুজনে গ্রামের দিকে পালিয়ে যান। গিয়াসউদ্দিন আরও জানিয়েছে যে তারা কার্তুজগুলি সংগ্রহের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বিএসএফ জওয়ানদের দেখে তারা পালিয়ে যাওয়াই শ্রেয় মনে করেন।  এর পর মোহাম্মদ নাজির হোসেন মুল্লাকেও তার বাড়ির কাছ থেকে আটক করে বিএসএফের অনুসন্ধানকারী দল। জিজ্ঞাসাবাদে সেও ঘটনার কথা স্বীকার করেন, দাবি সীমান্তরক্ষী বাহিনীর। 


আরও পড়ুন:দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির ঘাটতি কি ধাক্কা দেবে ধানের ফলনে? আশঙ্কা নানা মহলে