সঞ্চয়ন মিত্র, কলকাতা: এক মাস হয়ে গেল দক্ষিণবঙ্গে (South Bengal) বর্ষা (Monsoon) পা রেখেছে। অথচ এখনও দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির ঘাটতি (Shortage Of Rainfall) প্রায় ৪০ শতাংশ। কলকাতাতেই প্রায় ৫০ শতাংশের কাছাকাছি বৃষ্টির ঘাটতি দাঁড়িয়েছে। আগামী ৭ থেকে ১০ দিনে এই ঘাটতি মেটার সম্ভবনা দেখছেন না আবহবিদরা। ফল? দক্ষিণবঙ্গের ধান চাষে (Paddy Production) ব্যাপক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা, মনে করছেন কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত সকলে।
কোথায় আশঙ্কা?দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা ঢুকে ছিল ১৯ শে জুন নির্ধারিত সময়ের আট দিন পর। তারপর এক মাস কেটে গেলেও বৃষ্টির ঘাটতিতে ভুগছে দক্ষিণ বঙ্গ। দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে বৃষ্টির হাহাকার বলা চলে। পয়লা জুন থেকে এযাবৎ গোটা রাজ্যে বৃষ্টির ঘাটতি তেরো শতাংশ। তারমধ্যে শুধু দক্ষিণবঙ্গেই ঘাটতির পরিমাণ ৩৬ শতাংশ। কলকাতাতেই প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ বৃষ্টির ঘাটতি। বাঁকুড়া পুরুলিয়া মুর্শিদাবাদ সহ বেশ কিছু জেলায় বৃষ্টির ঘাটতি অনেকটাই বেশি। কোথায় কত ঘাটতি?হিসেব বলছে, ১ জুন থেকে এখনও পর্যন্ত বৃষ্টির ঘাটতি শতাংশের হারে, রাজ্যে সার্বিক ঘাটতি ১৩%দক্ষিণবঙ্গে সামগ্রিক ঘাটতি ৩৬%কলকাতায় ঘাটতি ৪৭%পুরুলিয়া ঘাটতি ৬২%বাঁকুড়ায় ঘাটতি ৫৮%হাওড়ায় ঘাটতি ৫৩%পশ্চিম মেদিনীপুরে ঘাটতি ৫২%মুর্শিদাবাদে ঘাটতি ৪৮%
উত্তরবঙ্গের সঙ্গে ফারাক...বর্ষার এই মরসুমে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি হয়েছে স্বাভাবিকের থেকে ২১ শতাংশ বেশি। সেখানে ভারী থেকে অতি ভারী, কখনও প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। মৌসুমী অক্ষরেখা বেশিরভাগ সময় সক্রিয় ছিল উত্তরবঙ্গে। আর দক্ষিণবঙ্গে গত এক মাসে মৌসুমী অক্ষরেখা একবারের জন্যও সক্রিয় হয়নি। তাই দক্ষিণবঙ্গে প্রবল বৃষ্টি দূরস্থান, ভারী বৃষ্টিরও দেখা নেই। এই কারণেই বর্ষা প্রবেশের এক মাস পরেও কার্যত বৃষ্টির পথ চেয়ে রয়েছে দক্ষিণবঙ্গ। ধান চাষের মরশুমে এর প্রভাব পড়বে বলেই মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। দক্ষিণবঙ্গের চাষীদের এখনই আসার কথা শোনাতে পারছেন না আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। পূর্বাভাস বলছে আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এই ঘাটতি পূরণ সম্ভব নয়। গত এক দেড় মাসে যে কয়েকটি ঘুর্নাবর্ত বা সিস্টেম বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে তা বেশিরভাগই ওড়িশা উপকূলে। তাই তাদের প্রভাব দক্ষিণবঙ্গে পড়েনি। আগামী দিনে বাংলাদেশ সংলগ্ন উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে সিস্টেম তৈরি না হলে রাজ্যে বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির ঘাটতি পূরণ সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। সব মিলিয়ে অশনি সঙ্কেত যা দূর করতে এখন ঘন-কালো বর্ষার মেঘের অপেক্ষায় ধানচাষের সঙ্গে জড়িত সকলে।