রণজিৎ সাউ, উত্তর ২৪ পরগনা: অ্যাডিশনাল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে (Additional Judicial Magistrate) সাইবার প্রতারণা (Cyber Crime) মামলায় গ্রেফতার (One More Arrested) আরও এক। আন্তঃরাজ্য প্রতারণা চক্রের ভুয়ো নথির সিম কার্ড প্রোভাইডার সন্দেহে গ্রেফতার ওই ব্যক্তি। পুলিশের দাবি, অভিযুক্ত স্বীকার করেছেন শতাধিক ভুয়ো নথির সিম কার্ড কলকাতা থেকে ভিন রাজ্যে পৌঁছে যেত। এর পরই তাঁকে গ্রেফতার করে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ।
কী জানা গেল?
পুলিশ সূত্রে খবর, ২০২২-র অক্টোবর মাসে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সোমশুভ্র ঘোষালের স্ত্রী অ্যাডিশনাল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মধুমিতা চৌধুরী বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় একটি অভিযোগ করেন। তাতে বলা হয়, পুরীতে ঘুরতে যাওয়ার জন্যে অনলাইনের মাধ্যমে একটি পাঁচতারা হোটেল বুকিং করার চেষ্টা করেছিলেন। সেই সময় তাঁকে সেই হোটেলের বুকিং প্রসিডিউরের জন্যে একজন ফোন করেন। সেখানে তাঁকে বুকিংয়ের জন্যে টাকা জমা করতে বলা হয়। সঙ্গে একটি অ্যাকাউন্ট ডিটেলসও দেওয়া হয়েছিল। সেই অ্যাকাউন্টে তিনি ৯২ হাজার টাকা ট্রান্সফার করেছিলেন। তবে কিছু দিন পরে ওই হোটেলে খোঁজ নিলে জানতে পারেন, তাঁর নামে ওই হোটেলে কোনও বুকিং হয়নি। প্রতারণার শিকার হয়েছেন বুঝতে পেরে পুলিশের দ্বারস্থ হন অ্যাডিশনাল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মধুমিতা চৌধুরী। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে ওই হোটেলের ভুয়ো ওয়েবসাইট তৈরি করে এই প্রতারণা চক্র চালানো হচ্ছিল।
এর পর...
এর পরই ওই অ্যাকাউন্টের সূত্র ধরে রাজস্থানের ভরতপুর এলাকায় হানা দেয় পুলিশ। সেখান থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত প্রেম চাঁদকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে এই চক্র বিভিন্ন মানুষকে ফোন করার জন্যে যে সিম কার্ড ব্যবহার করত, তার সবকটিই ভুয়ো নথি দিয়ে তোলা হয়েছিল। সেই তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে গেলে পুলিশ জানতে পারে হুগলি জেলার এক ব্যক্তির থেকেই সেই প্রতারকদের কাছে সিম কার্ড পৌঁছেছে। এরপরই হুগলি জেলার খানাকুলে হানা দিয়ে স্বর্ণদীপ রায়কে গ্রেফতার করে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি পুলিশের কাছে স্বীকার করে নেন যে, বিভিন্ন ব্যক্তির নথি জাল করে সেই ভুয়ো নথির মাধ্যমে সিম কার্ড চালু করতেন। এরপরই সেই সিম কার্ড তিনি ভিন রাজ্যের ব্যাক্তিদের বহু পরিমাণ টাকার বিনিময় বিক্রি করতেন। এই ভাবে এখনও পর্যন্ত দিল্লি এবং রাজস্থানে ১০০টির বেশি সিম কার্ড তিনি পাঠিয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর। আজ অভিযুক্তকে বিধাননগর আদালতে তোলার কথা। পুলিশ তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এই ব্যক্তি কাদের এই ভুয়ো নথির সিম কার্ড বিক্রি করতেন, তাঁদের খোঁজে তদন্ত শুরু করেছে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ।
আরও পড়ুন:'হাইকোর্টের নির্দেশ মেনেই অনুব্রতকে কলকাতায় আনতে হবে', নির্দেশ সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের