সমীরণ পাল,উত্তর ২৪ পরগনা: বৈদ্যুতিন তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে নাবালিকা ধর্ষণে অভিযুক্তকে পকসো আইনে দোষী সাব্যস্ত করল বারাসাত আদালত। সোমবার দোষী সাব্যস্ত সোমনাথ পালের সাজা ঘোষণা করা হবে। এই প্রথম বৈদ্যুতিন তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে পকসো মামলার নিষ্পত্তি হল। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন দোষী সাব্যস্তর আইনজীবী। 


৫ বছর আগে নিউটাউনে নাবালিকাকে ধর্ষণে অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করল বারাসাত আদালত। সূত্রের খবর, বৈদ্যুতিন তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে এই প্রথম দোষী সাব্যস্ত হল পকসো আইনে অভিযুক্ত। নিউটাউনে এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে পেশায় ডেলিভারি বয় সোমনাথ পালের বিরুদ্ধে।


২০১৮ সালের ৩ মে নিউটাউনের একটি বহুলতে ডেলিভারি করতে যায় সোমনাথ পাল স্থানীয় বাসিন্দা ৯ বছরের এক নাবালিকাকে ঠিকানা চিনিয়ে দেওয়ার জন্য ওই বহুতলে নিয়ে যায় সোমনাথ । অভিযোগ ম্যাজিক দেখানোর নাম করে নাবালিকাকে বিল্ডিংয়ের ১৪ তলায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে সে। নির্যাতিতা নাবালিকা তাঁর দিদাকে বিষয়টি জানায়। ঘটনায় সোমনাথ পালের বিরুদ্ধে নিউটাউন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নাবালিকার বাবা।


সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সোমনাথ পালকে গ্রেফতার করে নিউটাউন থানার পুলিশ। পকসো আইনে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়। ৫ বছর ধরে আদালতে চলে মামলা। বহুতলের রেজিস্টারে অভিযুক্ত সোমনাথ উল্লেখ করেছিল বিকেল ৪টে ১০ মিনিটে বিল্ডিংয়ে ঢুকে, ৪টে ১৭ মিনিটে বেরিয়ে যায়। 


৭ মিনিটের মধ্যে ধর্ষণ করে বেরিয়ে যাওয়া কি সম্ভব? আদালতে এ নিয়ে সওয়াল করেন অভিযুক্তের আইনজীবী। আদালতের অনুমতিতে নির্যাতিতা ও অভিযুক্তের থ্রিডি ইমেজ নেওয়া হয়। সিসিটিভি ফুটেজের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয় সেই থ্রিডি ইমেজ। পাশাপাশি, রেজিস্টারের সইয়ের সঙ্গে ও অভিযুক্তের হাতের লেখার নমুনা মিল যায়। 


বহুতল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় রেজিস্টারে ৪টে ১৭ লেখা হলেও, প্রমাণ পাওয়া যায়, সোমনাথ বেরিয়েছিল ৪টে ৩০-এর পর । এই সব প্রমাণের ভিত্তিতেই শনিবার অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। 
 
বিশেষ সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায়ে কথায়, ও যে ভিজিটিং রেজিস্ট্রারটায় সই করেছে তাতে ওর হাতের লেখা মিলে গেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে ওই ওখানে ঢুকেছিল। ওই দিন কনসাইনমেন্টটা ডেলিভারি হয়নি। রিটার্ন করেছিল কোম্পানীকে। বিভ্রান্ত করার জন্য ও ওইরকম টাইম দিয়েছিল। কিন্তু, সিসিটিভিতে দেখা যাচ্ছে ওই ঢুকেছিল এবং নেমেছিল।


রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন সোমনাথের আইনজীবী। দোষী সাব্যস্তের আইনজীবী রুইদাস পালের কথায়, ইলেকট্রনিক এভিডেন্স আমার মনে হয় না অতটা শক্ত ও জোরালোভাবে আসামীর বিরুদ্ধে প্রমাণিত হয়েছে। যেটা দেখাতে চেয়েছিল। তদন্তকারী অফিসারের সাক্ষ্য থেকে পরিষ্কার নির্যাতিতা আসেনি ওই যুবক যায়নি। ইলেকট্রনিক এভিডেন্স ম্যানুপুলেট করা হয়েছে বলে ধারনা। ইলেকট্রনিক এভিডেন্স ম্যানুপুলেট করা যায়। আমরা উচ্চ আদালতে যাব রায়ের বিরুদ্ধে। সোমবার সাজা ঘোষণা করবে বারাসাত আদালত।