সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: ৪ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা মূল্যের সোনা পাচারের চেষ্টা বানচাল করে দিল ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (BSF Foils Gold Smuggling Attempt)। বিএসএফের দাবি, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ৬০টি সোনার বিস্কুট-সহ এক সোনা পাচারকারীকে ধরেছে তারা। ধৃতের নাম সুরজ মগ বলে জানিয়েছে বিএসএফ। অভিযুক্ত উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ এলাকার জয়পুর গ্রামের বাসিন্দা।


যা জানা গেল...
গত ১ নভেম্বর, দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের আইসিপি পেট্রাপোল ১৪৫ নম্বর ব্যাটালিয়ন বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের জওয়ানরা সুরজকে ধরেন। বিএসএফের দাবি, তাঁর কাছ থেকে ৬০ টি সোনার বিস্কুট মিলেছে। চোরাচালানকারী সন্দেহে বিএসএফের হাতে পাকড়াও সুরজ এই সোনার বিস্কুটগুলো বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচারের চেষ্টা করছিলেন বলে দাবি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর। সোনার বিস্কুটগুলির ওজন আনুমানিক ৬.৯৯৮  কিলোগ্রাম। বাজারমূল্য আনুমানিক ৪ কোটি ৩২ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা।
সীমান্তরক্ষী বাহিনীর দাবি, ১৪৫ নম্বর ব্যাটালিয়ন বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের কর্মীরা চেকপোস্টে ডিউটির সময় আইসিপি পেট্রাপোলে একটি খালি ভারতীয় ট্রাক দাঁড় করান। সূত্রের খবর, বিএসএফ-এর গোয়েন্দা শাখা থেকে প্রাপ্ত নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই জওয়ানরা ট্রাকের কেবিনে একটি নির্দিষ্ট স্থানে তল্লাশি করেছিলেন। সেখান থেকে সাদা স্বচ্ছ টেপে মোড়া ৬০ টি সোনার বিস্কুট উদ্ধার হয়, জানাচ্ছে বিএসএফ। তাতে বিভিন্ন ধরনের চিহ্ন-ও ছিল। পরে ঘটনাস্থল থেকে ট্রাকের চালককে আটক করে সোনার বিস্কুট বাজেয়াপ্ত করা হয়।


কী জানিয়েছেন অভিযুক্ত?
বিএসএফ সূত্রে দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে সুরজ নিজেকে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁর অন্তর্গত জয়পুরের বাসিন্দা বলে পরিচয় দেন। পেশায় একজন ট্রাকচালক হিসেবে কাজ করেন সুরজ। প্রায় এক বছর ধরে ওই ট্রাক চালাচ্ছেন তিনি। আরও জানা যায়, প্রায়শই আইসিপি পেট্রাপোলের মাধ্যমে কলকাতা থেকে বেনাপোল স্থলবন্দরে পরিবহন পণ্য লোড করে বাংলাদেশে যান সুরজ ।  বিএসএফের দাবি, সুরজ জানিয়েছেন, গত ৩১ অক্টোবর বেনাপোল স্থলবন্দরের আনলোডিং এলাকায় রফতানির কার্গো 'আনলোড' করার পর, মহম্মদ মামুন নামে একজন বাংলাদেশি নাগরিক তাঁকে কিছু সোনার বিস্কুট ভারতে পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এই কাজের বিনিময়ে সুরজকে বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০ হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।  মামুনের নির্দেশ মোতাবেক, নিকটবর্তী গ্রাম পেট্রাপোলে পৌঁছানোর পর, আজগর শেখ নামে একজন ভারতীয় নাগরিককে বিস্কুটগুলো হস্তান্তর করতে হত। মায়ের চিকিৎসার জন্য অর্থের প্রয়োজন ছিল সুরজরে। তাই তিনি রাজি হয়েছিলেন, বিএসএফের কাছে জানান সুরজ। পণ্য নামানোর পর ট্রাকের ভেতরে নির্দিষ্ট স্থানে সোনার বিস্কুটগুলি লুকিয়ে খালি ট্রাকে করে বেনাপোল স্থলবন্দরে চলে যান।  ১ নভেম্বর আইসিপি পেট্রাপোলের যানবাহন চেকিং এলাকায় পৌঁছালে নিরাপত্তা কর্মীরা ট্রাকটিকে থামান। তার পরই সবটা ফাঁস হয়ে যায়। দক্ষিণবঙ্গ সীমান্ত জওয়ানদের জনসংযোগ আধিকারিক, ডিআইজি, একে আর্য বলেন, 'ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে চোরাচালান বন্ধে বিএসএফ কঠোর পদক্ষেপ করছে। চোরাকারবারীরা মাঝে মাঝে বিভিন্ন মাধ্যমে সীমান্ত দিয়ে পাচারের চেষ্টা করে। তবে সীমান্তে যে কোনও ধরনের চোরাচালান বন্ধে বিএসএফ সম্পূর্ণভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।'