সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (TMC MP Abhishek Banerjee) 'নবজোয়ার' কর্মসূচি ঘিরে তেতে উঠল ঠাকুরনগর (Thakurnagar)। অভিযোগ, জোর করে ঠাকুরনগরের মন্দিরের ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভেঙে ফেলা হয় অভিষেকের কর্মসূচি উপলক্ষ্যে তৈরি হওয়া তোরণ।  ভিতরে যাঁরা ছিলেন তাঁদের বলপূর্বক বের করে দেওয়া হয় বলেও খবর। ভিতরে তখন বিজেপি সাংসদ তথা জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur) । বাইরে তুমুল বিক্ষোভ তৃণমূল কর্মীদের। অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনী তাঁদের বের করে দিয়েছে। পরে তৃণমূল সাংসদ বলেন, 'মতুয়া মন্দির কারও পৈতৃক সম্পত্তি নয়। আগামী দিনে মানুষ এর জবাব দেবে।'


কী কী ঘটল?
আগেই মুখ্যমন্ত্রীর নামে পোস্টার দিয়েছিল অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘ। বিষয়টি নিয়ে এদিন কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরকে প্রশ্ন করা হলে তাঁর চাঁচাছোলা জবাব, 'ওঁর পিসি ঠাকুরের নামে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করবে, তা ওঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে নাকি?'গত ফেব্রুয়ারিতে হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের নাম বিকৃত করার অভিযোগে পথে নেমেছিলেন মতুয়ারা। মুখ্যমন্ত্রীর ভুল উচ্চারণের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।যা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয়। এদিন সেই অনুষঙ্গ টানার পাশাপাশি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও তীব্র কটাক্ষ করেন শান্তনু সেন। বলেন "অভিষেক কে? কোন মন্ত্রী ও? বাংলার মন্ত্রী না কেন্দ্রের? এত সাজগোজ হচ্ছে, মন্ত্রী এলেও হয় না, প্রধানমন্ত্রী যখন এসেছিলেন, তখনও হয়নি। ও কে? সাধারণ সাংসদ। ওঁর লোকসভায় এসব হোক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না থাকলে, সাংসদ হিসেবে অভিষেক কে? সূর্যের আলোয় চাঁদ যেমন আলোকিত হয়, ও তাই হয়েছে। ব্যক্তিগত ভাবে ও যেমন সাংসদ, আমিও সাংসদ। ভোটের আগে ঠাকুরবাড়িতে এই মুহূর্তে কী আছে?" তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ তথা ঠাকুরবাড়িরই সদস্য মমতাবালা ঠাকুর। তিনি বলেন, "প্রধানমন্ত্রী যখন এসেছিলেন, অমিত শাহ যখন এসেছিলেন, আমরা সম্মান জানিয়েছি। এখন যে রাজনীতি হচ্ছে, পুরোটাই বিজেপি-র। যে পোস্টার লাগানো হয়েছে, সেগুলি শান্তনু ঠাকুরের বাড়ি থেকে বার করতে দেখেছি আমি। শান্তনুর পিএ তন্ময় পোস্টারগুলি লাগাচ্ছিলেন। ঠাকুরনগরবাসী কী করবেন জানি না। কিন্তু আমরা যাঁরা আছি, আপনারা দেখবেন একটু পরেই কী ভাবে জনজোয়ার নামে।" তবে যে ভাবে ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়ির নাটমন্দিরে রাজ্য পুলিশ আসে, তা নিয়ে দৃশ্যতই ক্ষুব্ধ শান্তনু ঠাকুর। পুলিশ কর্মীদের সরিয়েও দেওয়া হয়। 


জবাব অভিষেকের...
পরে ঠাকুরনগরে পৌঁছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'মতুয়া মন্দির কারও পৈতৃক সম্পত্তি নয়। সকাল থেকে বিজেপির লোকেরা মন্দির ঘিরে রেখেছে। আগামী দিনে মানুষ এর জবাব দেবে।  শান্তনু ঠাকুর যে বাড়িতে থাকেন, সেখানকার জলের ব্যবস্থা মমতা করেছেন। যে রাস্তা দিয়ে হেঁটে তৃণমূলকে চমকাচ্ছেন সেই রাস্তাও মমতার করে দেওয়া।'


আরও পড়ুন:হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের নাম বিকৃতের অভিযোগ মমতার বিরুদ্ধে, পথে মতুয়ারা