সমীরণ পাল, সন্দেশখালি: গণধর্ষণ ও খুনের চেষ্টার অভিযোগে ন্যাজাট থেকে গ্রেফতার হয়েছে শিবু হাজরা। সন্দেশখালি ও জেলিয়াখালিতে শিবু হাজরার সম্পত্তি নষ্টের ঘটনায় নাম জড়িয়ে তৃণমূল নেতা দিলীপ মল্লিকের। সন্দেশখালিতে অশান্তি পাকানোর ঘটনায় দিলীপ মল্লিকের হাতে আছে বলে অভিযোগ করেছিলেন শিবু হাজরা। ‘দিলীপ মল্লিক বিজেপি না’ নাকি‘দিলীপ মল্লিক টিএমসিরই লোক’ ? এবার সেই দিলীপ মল্লিক সম্পর্কে ইঙ্গিত পূর্ব মন্তব্য সন্দেশখালি ২ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ দীপিকা পোদ্দারের।


 সন্দেশখালি ২ পঞ্চায়েত সমিতি কর্মাধ্যক্ষ দীপিকা পোদ্দার বলেছেন, আমার মতে দিলীপ মল্লিক বলা হচ্ছে উনি বিজেপি করেন, আমি তো ঠিক জানি না যে উনি কি করেন না করেন। তবে উনি আমাদের সঙ্গে আমাদের পার্টিটা নিষ্ঠা ভাবেই করতেন। এখন ভেতরের খবর আমি তো বলতে পারব না।  আমি নিজের কথা বলতে পারব। অন্য কে কি করবে আমার পক্ষে তো বলা সম্ভব নয়।  অনেকদিন হয়ে গেছে সাত আট মাস ঠিকই বলেছেন। মাঝখানে আমরা ওনাকে দেখিনি। উনি আসেনও না কোনও পার্টির কাজে। যেহেতু উনি চলে গেছেন। ওনার প্রতি অভিযোগ হয়েছিল উনি বিজেপি করছেন।  কিন্তু আমরা যতদুর জানি উনি বিজেপি না উনি টিএমসিরই লোক। 


দীর্ঘদিন দিলীপ মল্লিকের সহকর্মী ছিলেন দীপিকা।একই পঞ্চায়েত সমিতির ভূমি ও ভূমি সংস্কার কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন দিলীপ ও শিশু , নারী উন্নয়ন জনকল্যাণ ও ত্রাণ  কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন দীপিকা। অশান্ত সন্দেশখালিতে দিলীপের পাশে দাঁড়ালেন তিনি। সন্দেশখালিতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ইঙ্গিত দিলেন দীপিকা। টাকার বখরা সংক্রান্ত সমস্যারে জেরেও বিক্ষোভ হতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁর।দীপিকা পোদ্দার আরও বলেন,যাঁরা প্রতিবাদে নেমেছে তাঁরাও অধিকাংশ টিএমসিরই লোক। কেউই বিজেপি সেরকম করে না। হয়তো তাঁরা প্রাপ্য টাকা পাচ্ছে না বলে এখন বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। এই বিক্ষোভের সুযোগ নিয়ে অন্য পার্টিরা কী করছে,উস্কানিমূলক কাজ করে আমাদের সন্দেশখালিতে আগুন তৈরি করে দিচ্ছে। 


সিপিএম থেকে তৃণমূলে এসেছিলেন দিলীপ। তারপরেই রকেট গতিতে উত্থান হয় তাঁর। ২০১৬ সালের আগে সিপিএম থেকে তৃণমূলে আসে দিলীপ মল্লিক। ২০১৮-২০২৩ সন্দেশখালির পঞ্চায়েত প্রধান ও স্থানীয় অঞ্চল সভাপতি ছিলেন দিলীপ। পঞ্চায়েত ভোটের আগে দিলীপের জায়গায় আসে উত্তর সর্দার। শিবু হাজরার সঙ্গে সমস্যার জেরে পদ খোয়ান দিলীপ। দীপিকার মন্তব্যে মিলেছে সেই ইঙ্গিত।


আরও পড়ুন, রাত পেরোতেই উঠল পিচ, রাস্তা তৈরিতে 'নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারে' কাজ বন্ধ এই অংশে..


 দীপিকা পোদ্দার আরও বলেন, ব্যাক্তিগত কোনও গণ্ডগোল থাকতে পারে আমি এটা ঠিক জানি না। আমি বলতে পারব না। হতে পারে কেননা সত্যি বলতে আমি যতদুর জানি সন্দেশখালির সবাই টিএমসি করে। এবার তাঁদের মধ্যে হয়তো কারও কাজ দেখে তাঁদের সন্দেহ হয়।  তখন ভাবে যে এরা আমাদের পার্টি করছে না। কিন্তু এটা সত্যি কি মিথ্যে এটা তদন্ত সাপেক্ষ। সাত আট মাস আগে দিলীপকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল শিবু হাজরা ও উত্তর সর্দারের অনুগামীদের বিরুদ্ধে। তারপর থেকে এলাকা ছাড়া দিলীপ। এই পরিস্থিতিতে দীপিকার একাধিক ইঙ্গিত পূর্ণ মন্তব্য নতুন বিতর্কের জন্ম দিতে পারে।