সমীরণ পাল, উত্তর চব্বিশ পরগণা :  বনগাঁ  ‘ট’ বাজারের দাঁ বাড়ির দুর্গাপুজো এবার ৫০ বছরে পদার্পণ করল ।  দেড়শ বছর আগে বৈঁচি থেকে গোপালনগরের দাঁ বাড়িতে এসে পুজোর সূচনা করেন কৃষ্ণচন্দ দাঁ । সেই সময় বৈঁচিতে  বর্গী আক্রমণ হওয়ার সেখান  থেকে বাঁচার জন্য কৃষ্ণচন্দ্র দাঁ  তার পরিবার নিয়ে চলে আসেন গোপালনগরে।   ইছামতি নদী পথে গোপালনগরে এসে একদিকে বাণিজ্য শুরু করেন তিনি।



ভিটে ছেড়ে এলেও পরম্পরা ছাড়েননি।  বৈঁচি বাড়ির কমলে কামিনী রূপেই গোপালনগর দাঁ বাড়িতে পুজো শুরু হয় । বছর ৫০ আগে, কৃষ্ণচন্দ্র দাঁ-এর পঞ্চম বংশধর অজিত কুমার দাঁ ব্যাবসায়িক সূত্রে বনগাঁ ‘ট’ বাজারে চলে আসেন । এখানে বসতি গড়ে তোলবার পর ট'বাজারের বসতবাড়িতে 1971 সালে তিনিও পুজো শুরু করেন । তারপর থেকে ধীরে ধীরে এই পরিবারে কমলে কামিনী  অভয়ারূপে দেবী দুর্গার পুজো শুরু  হয় ।


 ধনপতি পুত্র শ্রীমন্ত বাণিজ্য  করার পথে বিপদে পড়েন । ঝড়ে মাঝ সমুদ্রে  জলে ডুবে যাচ্ছিলেন ... সেই সময় মা দুর্গা তার হাত ধরে তোলেন বলে কথিত আছে। দেবীর সেই রূপকে কমলে কামিনী রূপ বলে। একই সঙ্গে এই বাড়িতে কুমারী পুজো হয় । ধুনো পোড়ানো  এই বাড়ির একটি একটি অভিনবত্ব বিষয় । এই পরিবারের তরফে কৃষ্ণপদ  দাঁ জানিয়েছেন, করোনা অতিমারীর মধ্যে  সমস্ত বিধি নিষেধ মানা হচ্ছে। সব দিক মাথায় রেখে পুজো যাতে শান্তিপূর্ণভাবে হয়, সেই ব্যবস্থা বাড়ির তরফে করা হয়েছে ।

অন্যদিকে, এবারও করোনা আতঙ্কে ঐতিহাসিক গোবরডাঙ্গা জমিদার বাড়ির পুজো ঘট পুজোতেই সীমাবদ্ধ থাকবে। পলাশীর যুদ্ধের আগে প্রায় ৩০০ বছর আগে সূচনা হয়েছিল গোবরডাঙ্গা জমিদারবাড়ির ঐতিহাসিক দুর্গোৎসব। গত দু'বছর ধরে করোনার করাল গ্রাসে ঘট পুজো টুকুই হচ্ছে।  তবে ঐতিহ্যে এতটুকু ভাটা পড়েনি গোবরডাঙ্গার জমিদারবাড়িতে।  পূর্ব পুরুষ শ্যামলাল চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে পলাশীর যুদ্ধের কিছুদিন আগে সূচনা হয়েছিল গোবরডাঙ্গার ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ির পুজোর। এরপরে শ্যামলালের ছেলে খেলারামের আমলে জমিদারি আরও বিস্তৃত হয়, স্বাভাবিক ভাবেই পুজোর ব্যাপ্তি আরো বেড়ে যায়।