উত্তর ২৪ পরগনা: দত্তপুকুরে বাজি বিস্ফোরণে মৃত্যুমিছিল, গ্রামে ফিরতেই অভিযুক্তের ছেলেকে দেওয়া হয়েছে গণধোলাই। দত্তপুকুরে কীভাবে বেআইনি বাজির আড়ত ? তৃণমূল-যোগের দাবি স্থানীয়দের। আতসবাজির নামে একের পর এক বেআইনি শব্দবাজির বাজির গুদাম। অভিযুক্ত আজিবর রহমানের ছেলে গ্রামে ফিরতেই গণপিটুনির অভিযোগ।


উল্লেখ্য, দত্তপুকুরের মোচপোলের পাশেই কাঠুরিয়া গ্রাম। সেখানে গ্যারাজ ভাড়া নেওয়ার নামে বাজি মজুত করা শুরু করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা আলতাফ, এমনই দাবি বাড়ি মালিকের। অভিযোগ, বিস্ফোরণের পর থেকেই আলতাফ বেপাত্তা। ফোনেও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। এদিকে, গুদামভর্তি নিষিদ্ধ শব্দবাজি। বিস্ফোরণের আশঙ্কায় ঘুম উড়েছে বাড়ি মালিক ও কাঠুরিয়া গ্রামের বাসিন্দাদের।


প্রসঙ্গত, ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছে দত্তপুকুরের মোচপোল (Duttapukur incident)। তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে বিস্ফোরণে উড়ে যায় প্রায় আস্ত একটা বাড়ি। ছিন্নভিন্ন দেহাংশ ছিটকে পড়ে প্রায় ২০০ মিটার দূরে। কারও কারও হাত-পা উড়ে যায়। আগুনে ঝলসে যান বেশ কয়েকজন। অনেকেই বলছেন, কয়েক কিলোমিটার দূরে বারাসাত পর্যন্ত শোনা গেছে বিস্ফোরণের শব্দ।


বিস্ফোরণস্থলে নীল ড্রামে মজুত ছিল প্রচুর পরিমাণে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট (Amoneium Nitrate) ও পটাসিয়াম ক্লোরেট (Potassium Cloret)। বাজি কারখানার অদূরে হদিশ মিলেছে ল্য়াবরেটরিরও। এই প্রেক্ষাপটে দত্তপুকুরে বিস্ফোরণে RDX ব্যবহার হয়েছে বলে চাঞ্চল্য়কর অভিযোগ তুলেছেন শুভেন্দু অধিকারী । 


পাশাপাশি অভিযোগ উঠছে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তারও। স্থানীয়দের অভিযোগ, 'শুধু পুলিশের তোলা আর তৃণমূল নেতাদের কাটমানি খাওয়ার পরিমাণ বেড়েছিল। আগে কাটমানি ১০ হাজার হলে, এখন ২০ হাজার। আগে ৫০ হাজার নিলে, এখন এক লাখ। পঞ্চায়েতের পাশে কার্যত এটিএম খুলেছিল পুলিশ। ফাঁড়িতে পৌঁছে যেত তোলার টাকা।'


আরও পড়ুন, দত্তপুকুরে বিস্ফোরণের পর ট্রাকে করে বাজি পাচার ! ৫০ টন শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করল STF


তবে দত্তপুকুরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ৯ জনের মৃত্যুর পর কড়া পদক্ষেপ পুলিশের (Police)। সম্প্রতি দত্তপুকুরের মোচপোল, কাঠুরিয়া-সহ বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে ১ হাজার ৬০০ কেজি নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রাতে ৫-৬টি গাড়ি করে উদ্ধার হওয়া বাজি নিয়ে যাওয়া হয় থানায়।বাজি উদ্ধারে তল্লাশি চালানোর পাশাপাশি FIR-এ নাম থাকা রমজান আলি ওরফে কালোর খোঁজ করছে পুলিশ। মূল অভিযোগকারী প্রভাস চক্রবর্তীর অভিযোগে নাম রয়েছে এই ISF কর্মীর। তাঁর বিরুদ্ধে কেরামত আলির সঙ্গে যোগসাজশে বেআইনি বাজি কারবারে মদত জোগানোর অভিযোগ রয়েছে।