সমীরণ পাল, হাবড়া: এমএ পাশ করা মেয়ের চায়ের দোকান ঘিরে মাসখানেক আগেই শোরগোল পড়ে গিয়েছিল রাজ্যে। তাতে ভালই পরিচিতি তৈরি হয়েছিল ‘এমএ ইংলিশ চায়ওয়ালি’র। তাতে বিক্রিবাটাও বেড়েছিল তাঁর। কিন্তু এ বার রেলের সঙ্গে সঙ্ঘাতের জেরে বিতর্কে সেই তরুণী। হাবড়া স্টেশনে দ্বিতীয় চায়ের দোকান খুলতে উদ্যোগী হয়েছিলেন ওই তিনি। কিন্তু রেল পুলিশ সেই নির্মাণ রুখে দিয়েছে বলে অভিযোগ।


রোজগারের সন্ধান না পেয়ে লকডাউনে চায়ের দোকান খুলে বসেন টুকটুকি দাস। ইংরেজিতে এম এ পাশ করেও দোকান দিয়েছেন বলে, দোকানের নাম রাখেন ‘এম এ ইংলিশ চায়ওয়ালি’। নেটমাধ্যমের দৌলতে তা চাউর হতেই রাতারাতি আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসেন টুকটুকি। তাঁর মনোবলের প্রশংসা করেন কেউ কেউ। অনেকে আবার কর্মসংস্থানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।


তবে এই কাটাছেঁড়ার মধ্যে পড়েও টুকটুকির লাভই হয়। হাবড়ার বিধায়ক তথা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দেখা করেন তাঁর সঙ্গে। সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেন। এর পরই সম্প্রতি হাবড়া স্টেশনে দ্বিতীয় দোকান নির্মাণে হাত দেন টুকটুকি। কিন্তু আর কোনও দোকান নির্মাণ করা যাবে না বলে বৃহস্পতিবার রেল পুলিশ ওই নির্মীয়মান দোকান ভেঙে দেয় বলে অভিযোগ।


এ নিয়ে সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রেল হকার্স ইউনিয়নও এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। তাদের দাবি, টুকটুকির দোকান ভাঙার পিছনে বিজেপি-র ইন্ধন রয়েছে। যদিও রেল কর্তৃপক্ষ তা মানতে চাননি।তাঁরা জানিয়েছেন, টুকটুকির আগের দোকানটি যেমন রয়েছে, থাকবে। বেআইনি ভাবে দ্বিতীয় দোকান নির্মাণ করা হচ্ছিল, যা কোনও ভাবে বরদাস্ত করা হবে না। তার জন্যই রেলের তরফে অভিযান চালানো হয়। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।


মাস কয়েক আগে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাবরা স্টেশনের দু’নম্বর প্ল্যাটফর্মে চা বিক্রি করতে শুরু করেন টুকটুকি দাস। নেটমাধ্যমে বিপুল জনপ্রিয়তা পায় তাঁর দোকান। বিশেষ করে দোকানের নাম ‘এম এ ইংলিশ চায়ওয়ালি’ সকলের নজর কাড়ে। এর পরই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে উঠে আসেন টুকটুকি। এ বার সরাসরি রেলের সঙ্গে সঙ্ঘাতে জড়িয়ে পড়েছেন তিনি।


রেলের তরফে সাফ জানানো হয়েছে, আগে থেকে যে দোকানগুলি রয়েছে, সেগুলিই আপাতত থাকবে প্ল্যাটফর্মে। নতুন করে কোনও দোকান নির্মাণ করা যাবে না। তবে এ নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। টুকটুকির পাশে দাঁড়িয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও বিজেপি-র নীলরতন মিত্রের বক্তব্য, “তৃণমূল সব কিছুতেই রাজনীতি খুঁজে পায়। এটা বেআইনি নির্মাণ। তাই রুটিন অভিযান চালানো হয়েছে।” এ নিয়ে মুখএ কুলুপ এঁটেছেন টুকটুকি। কারও ফোন ধরছেন না তিনি।