সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: বেআইনি অস্ত্রের ঝনঝনানি, রাজনৈতিক উত্তাপ, রক্তপাত। পঞ্চায়েত ভোটের আগে বাংলা জুড়ে এমনই দৃশ্য। উত্তর থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে নদিয়া, একের পর এক জেলায় বোমাবাজির ঘটনা সামনে এসেছে। এবার সেই পঞ্চায়েত ভোটের মুখে কর্মীদের অস্ত্র প্রশিক্ষণের বিধান মদন মিত্রর (Madan Mitra)।
কী বলেছেন কামারহাটির বিধায়ক?
- ‘আমাদের কাছে ভাল ট্রেনার আছে, প্রশিক্ষণ নেবে কর্মীরা’
- ‘কোথায় কোথায় অস্ত্র পৌঁছচ্ছে জানলে সুবিধে হয়’
- ‘আমাদের কাছে প্রাক্তন সেনাকর্মীরা আছে, তারাই শেখাবে’
- ‘কীভাবে লক খুলতে হয়, ল্যাচ কি লাগাতে হয়, শিখবে তৃণমূলকর্মীরা’
আরও পড়ুন, ঝলমলে পাঞ্জাবি-পাজামা, হাত ভর্তি আংটি! বিধানসভায় 'কালারফুল' মদন
বেআইনি অস্ত্র নিয়ে নৈহাটিতে দলীয় সভা শেষে বেফাঁস কামারহাটির তৃণমূল বিধায়কের। মদন এও বলেন, "দিলীপবাবু বলেছেন যে, ওরা ওদের কর্মীদের ঘরে ঘরে অস্ত্র পৌঁছে দিচ্ছেন, এগুলো তারই হয়তো কোনও অংশ হবে। তবে আমি বলেছি, কোথায় কোথায় পৌঁছচ্ছেন জানতে পারলে, আমাদের সুবিধা হয়। আমাদের কর্মীরা ওগুলো নিয়ে নেবে, কারণ আমাদের কাছে ভাল ট্রেনার রয়েছে. এক্স-আর্মি, কর্নেল। প্র্যাকটিসটা করে রাখবে, যাতে বিজেপি ভাল ব্যবহার করতে পারে। শেখাবে, দেখাবে, যেমন অভিনয় শেখানো হয় না।"
মদনের কথায়, "আমাদের কর্মীরা তো টানতে শিখবে, ঢোকাতে শিখবে, ক্যাবিনেটটা কী করে খুলতে হয়, কী করে লকটা খুলতে হয়, ল্যাচ কী লাগাতে হয়, সেগুলো শিখবে। ফাঁকা মাঠ তো, গো...ও...ল।"
সম্প্রতি একের পর এক জেলায় বোমাবাজির ঘটনা সামনে এসেছে। কখনও বিস্ফোরণে হাত-পা উড়ে গিয়ে নিরীহ গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়েছে। কোথাও রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে বোমাবাজিতে হাত-পা খুইয়েছেন তৃণমূল কর্মী। বোমার আঘাত রক্তাক্ত করছে শৈশবকেও। গত ২৫ অক্টোবর, কাঁকিনাড়ায় রেললাইনের ধারে মজুত করে রাখা বোমা, বল ভেবে খেলতে গিয়ে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় এক শিশুর। বৃহস্পতিবারও কাঁকিনাড়া স্টেশনের কাছে লাইন থেকে তাজা বোমা উদ্ধার হয়। বুধবার মিনাখাঁয় মামার বাড়িতে বোমা ফেটে মৃত্যু হয় এক নাবালিকার। ঘটনায় নিহতের মামাকে গ্রেফতার করে পুলিশ! যিনি এলাকায় তৃণমূলের কর্মী বলেই পরিচিত।
এদিকে, একের পর এক ঘটনায় প্রশাসনের কপালেও চিন্তার ভাঁজ ক্রমশ চওড়া হচ্ছে। আর তা নিয়ে তেতে উঠেছে রাজনীতির ময়দান।