সমীরণ পাল, মধ্যমগ্রাম: ভুয়ো আইপিএস অফিসার, ভুয়ো আইএএস অফিসার, ভুয়ো ইনস্পেক্টরের পর এবার পুলিশের জালে ধরা পড়লেন ভুয়ো তৃণমূল নেতা। সদস্যপদ পাইয়ে দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মধ্যমগ্রামের ওই বাসিন্দার বিরুদ্ধে। ধৃত ব্যক্তি দলের কেউ নন বলে দাবি করেছে তৃণমূল। ফাঁসানোর অভিযোগ তুলেছে ধৃতের পরিবার।
ভুয়ো আইপিএস অফিসার, ভুয়ো আইএএস অফিসার থেকে ভুয়ো ইনস্পেক্টর, সম্প্রতি রাজ্যে একের পর এক এরকম ব্যক্তি গ্রেফতার হয়েছেন। যা নিয়ে রাজনীতির তরজা কম হয়নি। কিন্তু সর্ষের মধ্যেই কি ভূত? কারণ, পুলিশের জালে এবার ধরা পড়লেন ভুয়ো তৃণমূল নেতা! উত্তর চব্বিশ পরগনার মধ্যমগ্রামে গ্রেফতার হয়েছেন সুব্রত ভট্টাচার্য নামে এই ব্যক্তি।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, এক ব্যক্তি মধ্যমগ্রাম থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন যে, সুব্রত ভট্টাচার্য নিজেকে তৃণমূল নেতা এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল সোশাল মিডিয়া কমিটির সভাপতি বলে পরিচয় দিতেন। সেই পরিচয় দিয়ে তৃণমূলে সদস্যপদ পাইয়ে দেওয়ার নামে টাকা নিয়েছিলেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয় সুব্রত ভট্টাচার্যকে।
স্থানীয় সূত্রে দাবি, একটি গাড়িতে চড়ে ঘুরতেন ধৃত ব্যক্তি। গাড়িতে রাখা বোর্ডে লেখা আছে, তিনি সরকারি আইনজীবী। নিচে লেখা, মধ্যমগ্রাম তৃণমূল কংগ্রেস। সেই সঙ্গে নিজেকে ওয়েস্ট বেঙ্গল সোশাল মিডিয়া কমিটির আইটি সেলের সভাপতি বলেও পরিচয় দিতেন তিনি। নিজেকে তৃণমূল নেতা প্রমাণ করতে ফেসবুক প্রোফাইলে তৃণমূলের ঘাসফুল চিহ্নও ব্যবহার করতেন।
যদিও ধৃত ব্যক্তির সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই বলে দাবি করছে তৃণমূল। মধ্যমগ্রাম শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সুভাষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘আমাদের দলের কেউ নয়। নিজেকে পাবলিক প্রসিকিউটার বলে চলত। আমরা সতর্ক রয়েছি।’
তৃণমূল এই সাফাই দিলেও, কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। মধ্যমগ্রাম (পশ্চিম) মণ্ডল সভাপতি দেবাশিস চৌধুরীর কটাক্ষ, ‘ভোটের পর থেকে শুধু ফেক দেখছি। তৃণমূলেই এসব হবে। মানুষ এদের ভোট দিয়েছে।’
অন্যদিকে চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন ধৃতের স্ত্রী মহুয়া ভট্টাচার্য। তাঁর দাবি, ‘বিনা ওয়ারেন্টে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ষড়যন্ত্র করে ফাঁসিয়েছে। নিশ্চয়ই শত্রুপক্ষ আছে।’
ভুয়ো তৃণমূল নেতাকে চার দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে বারাসাত আদালত।