উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা : উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার (North and South 24 Paraganas) বেশ কয়েকটি পুরসভায়, একাধিক ওয়ার্ড একে অন্যের জন্য ছেড়ে রেখেছে বাম-কংগ্রেস (Left-Congress)। তাহলে কি দুই জেলায় আসন সমঝোতা করে লড়বে দুই শিবির ? তেমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন দুই দলের নেতারা।


উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সিপিএমর সদস্য তন্ময় ভট্টাচার্য বলেন, আমরা মনে করি, তৃণমূল এবং বিজেপিকে হারাতে ঐক্যবদ্ধ লড়াই প্রয়োজন।


অন্যদিকে প্রদেশ কংগ্রেস নেতা শুভঙ্কর সরকারের বক্তব্য, কোনও বিকল্প নেই, জোট করতেই হবে।


দেড় মাস আগের কলকাতা পুরভোটে জোট বাঁধেনি বাম-কংগ্রেস। বেশিরভাগ ওয়ার্ডেই একে অন্যের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েছিল তারা। কিন্তু আসন্ন পুরভোটে কলকাতা লাগোয়া দুই পরগনায় কি ফের কাছাকাছি আসতে চলেছে বাম ও কংগ্রেস ? দুই শিবির থেকে অন্তত এমনটাই ইঙ্গিত মিলেছে।


২৭ ফেব্রুয়ারি । উত্তর ২৪ পরগনার ২৫টি এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৬টি পুরসভায় ভোট হবে। তার মধ্যে উত্তর চব্বিশ পরগনার দমদম, নিউ ব্যারাকপুর, উত্তর ও দক্ষিণ দমদম, ব্যারাকপুর, পানিহাটি এবং বরানগর পুরসভায় কার্যত সমঝোতা করেই লড়ছে বাম ও কংগ্রেস। হাতে গোনা কয়েকটি ওয়ার্ড নিয়ে টানাপোড়েন রয়েছে। 


তন্ময় ভট্টাচার্য বলেন, কংগ্রেসের সঙ্গে কথা বলে, যাতে অনেকটাই সমঝোতা করা যায় আমরা তার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।


দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সমঝোতার সম্ভাবনার ছবিটা আরও স্পষ্ট। গতবার জয়নগর পুরসভা যেহেতু কংগ্রেসের দখলে ছিল, তাই এবার সেখানে ২টি ওয়ার্ডে প্রার্থী দিয়ে, বাকিগুলি কংগ্রেসের জন্যই ছেড়ে রেখেছে বামেরা। 


অন্যদিকে সোনারপুর-রাজপুর, বারুইপুর পুরসভায় বেশি আসনে লড়ছে বামেরা। কয়েকটা ওয়ার্ড তারা কংগ্রেসের জন্য ছেড়ে রেখেছে।


সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সম্পাদক শমীক লাহিড়ি বলেন, তৃণমূল এবং বিজেপিকে রুখতে হবে। তাই সার্বিকভাবে এই ঐক্য গড়ে তোলা খুব দরকার। 


২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে জোট করেও শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে বাম-কংগ্রেসকে। তারপর থেকে দু-পক্ষের তরফেই জোটের প্রতি অনীহা দেখা দেয়। বিধানসভা উপনির্বাচনেও জোট হয়নি। দেড় মাস আগে হয়ে যাওয়া কলকাতা পুরভোটেও, অনেক ওয়ার্ডে একে অন্যের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েছিল বাম ও কংগ্রেস। তাতে দেখা গেছে, ২১-এর বিধানসভা ভোটের ফলের নিরিখে কলকাতা পুর এলাকায় জোট বেঁধে ৭ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বাম-কংগ্রেস। সেখানে কলকাতা পুরভোটে বামেরা একাই পায় প্রায় ১২ শতাংশ ভোট। কংগ্রেস পায় ৪ শতাংশ ভোট।অর্থাৎ একা লড়ে আগের চেয়ে ভাল ফল করেছে বামেরা।


এখন দেখার, আসন্ন পুরভোটে দুই চব্বিশ পরগনায় জোট না বাঁধলেও, আসন সমঝোতা হলে, কেমন ফল করে বাম-কংগ্রেস?