সমীরণ পাল,  উত্তর ২৪ পরগনা : সারি সারি বেড। অনেক বেডেই মায়ের সঙ্গে সদ্যজাতরা। সেই ওয়ার্ডেই হালকা করে বাজানো হচ্ছে রবীন্দ্রসঙ্গীত (Rabindra Sangeet)।  প্রসূতি বিভাগে এ যেন মিউজিক থেরাপির  (Music Therapy) আয়োজন ! অভিনব এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে বারাসাত সদর হাসপাতালে।


দেড়শো বেডের প্রসূতি বিভাগে বসানো হয়েছে মিউজিক সিস্টেম। বারাসাত (Barasat) সদর হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল জানিয়েছেন, 'মিউজিক সিস্টেম লাগিয়েছি। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক প্রতিনিধিদল হাসপাতাল ঘুরে গেছে। তারাও এই ব্যবস্থা দেখে খুশি' । নতুন এই ব্যবস্থাপনায় খুশি প্রসূতিরা।  ওয়ার্ডে ভর্তি এক প্রসৃতি জানালেন তাঁর এই ব্যবস্থা ভালই লাগছে। মন ভাল থাকছে। আরেক প্রসূতির মতে, এই সময় নানা কারণে মনে উপর চাপ থাকে। টেনশন থাকে। রবীন্দ্রগানে কাটছে মনোর সেই গুমোট ভাব ! 
 আরও পড়ুন :


ব্লাড সুগারের রোগী? শরীর কাঁপছে? অত্যধিক ঘাম? হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ কিন্তু


শুধু মিউজিক সিস্টেমই নয়, প্রসূতি বিভাগের জন্য আলাদা করে বসানো হয়েছে আলট্রা সোনোগ্রাফি মেশিন। বিশেষজ্ঞরাও মনে করেন, পছন্দের সুর কানে গেলে মন ভাল হয়। গানের ধারা অনুযায়ী মন শান্ত হয় যেমন, তেমন বিষাদ কাটাতে রীতিমতো কার্যকরী এই মিউজিক থেরাপি। মনের অসুখের চিকিৎসায় মিউজিক থেরাপির ব্যবহার বহু প্রচলিত। 


গানের সুরে মন চনমনে হয়। গানের সুর অবসাদগ্রস্ত মন সারাতে সাহায্য করতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।  মিউজিক থেরাপির সুনির্দিষ্ট নিয়ম আছে যদিও। সঠিক পদ্ধতিতে গান শোনাতে পারলে হতাশা ভুলতে পারে মানুষ। রোগীর কষ্ট লাঘব হয়।  ডান্স থেরাপিতেই মন হয়ে উঠতে পারে চনমনে৷ রাতে যাঁদের ঘুম আসে না, তাঁদের সমস্যা মেটাতেও কাজ করে মিউজিক থেরাপি৷ গান মন ভাল করতে পারে প্রসূতিদেরও। 


জানা গিয়েছে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ও চিকিৎসকেরা আহত সৈন্যদের যন্ত্রণা কমানোর জন্য হালকা ধীর লয়ের গান শোনাতেন , তাতে উল্লেখযোগ্য ফলও মেলে বলেই শোনা যায়। মিউজিক থেরাপির সূত্রপাত সেই কাল থেকেই। সৈন্যদের কষ্ট কমানোয় সাফল্য মেলার পর বিশেষজ্ঞরা মিউজিক থেরাপির গুণ নথিবদ্ধ করেন।  শরীর ও মনের কষ্ট কমাতে মন ভাল রাখতে গানের জুড়ি নেই। সেই কথা ভেবেই বারাসাতের হাসপাতালে এই ব্যবস্থা।