কলকাতা : হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা hypoglycemia, ব্লাড সুগারের রোগীদের ক্ষেত্রে একটি সাধারণ সমস্যা। এই সমস্যায় জর্জরিত হন অনেকেই। বিশেষত যাঁরা নিয়মিত ব্লাড সুগারের ওষুধ খেয়ে থাকেন, তাঁদের মধ্যে এই সমস্যা কিন্তু খুবই কমন !
হাইপোগ্লাইসেমিয়া? রক্তে যে পরিমানে গ্লুকোজ থাকা দরকার, তার থেকে কমে গেলেই বলে হয় hypoglycemia পরিস্থিতি। কী হয় এই ক্ষেত্রে ? জানাচ্ছেন ডা. শুদ্ধসত্ত্ব চট্টোপাধ্যায়। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা (blood sugar levels ) থাকা দরকার ৭০ থেকে ১০০ mg/dL। এবার হাইপোগ্লাইসেমিয়া পরিস্থিতিতে ব্লাড সুগারের মাত্রা ৮০ এর থেকে কমে যায়। blood sugar কমে গেলেই এই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তাও মাত্রা ৬৫-৭০ এর মধ্যে থাকলে তাকে মাইল্ড হাইপোগ্লাইসেমিয়া বলা হয়ে থাকে। ৫০ থেকে ৬৫ র মধ্যে সুগারের মাত্রা হলে মডারেট হাইপোগ্লাইসেমিয়া বলা হয়। কিন্তু সুগারের মাত্রা ৫০mg/dL এর নিচে নেমে গেলে সমস্যা অত্যন্ত গুরুতর হিসেবে ধরা হয়। সেটা খুবই মারাত্মক হতে পারে। ব্লাড সুগারের ওষুধ যখন প্রথম প্রেসক্রাইব করা হয় কাউকে, তখন রোগীদের হাইপোগ্লাইসেমিয়া সম্পর্কে কয়েকটি লক্ষণ বলে দেওয়া হয়। যেমন -
- বেশি খিদে পাওয়া
- গলা শুকিয়ে যাওয়া
- মাথা ঝিমঝিম করা
- মাথা ঘোরা
- ঘাম হওয়া । এই ঘাম মোটেই কঠোর পরিশ্রমের পরে হওয়া ঘাম নয়। এগুলিকে বলা হয় কোল্ড সোয়েট।
আরও পড়ুন :
ডায়াবেটিকদের মধ্যে কোন কোন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি? কেন?
এছাড়া মডারেট হাইপোগ্লাইসেমিয়া রোগীদের মধ্যে ঝিমুনি বা ঘুমের ভাব বেশ হয়। সেটা বেশ খারাপ। কারণ ঘুমিয়ে পড়লে রোগী বলতে পারেন না। তলে তলে ব্লাড সুগারের মাত্রা আরও নামতে পারে। সেই সঙ্গে শরীর আরও অস্থির হয়ে ওঠে। - শরীর অস্থির করে
- মাথা ঘোরে
- বুকের ভিতর চাপ লাগে ।
এই লক্ষণগুলি হার্ট অ্যাটাকের আগের লক্ষণের সঙ্গে অনেকটাই মিলে যায়। সিভিয়ার hypoglycemia র ক্ষেত্রে - রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে
- মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
- কোমায় চলে যেতে পারে রোগী।
তাই সেক্ষেত্রে শিরার মধ্যে ইঞ্জেকশন বা ইনট্রাভেনাস ইঞ্জেকশন দিতে হয়। দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করে মনিটরিং করতে হয়। বিশেষ এক ধরনের স্যালাইনও দিতে হয়। মাইল্ড hypoglycemia রক্ষেত্রে মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে সমস্যা কমে যায়। - গ্লুকোজ জলে গুলে খাওয়া যেতে পারে
- গ্লুকোজের ট্যাবলেটও পাওয়া যায় আজকাল ।
- চিনিও খাওয়া যেতে পারে।
- ব্লাড সুগারের ওষুধ পাল্টাতে হতে পারে।
উপোস করলে বা কোনও খাবার বাদ দিলে এই সমস্যা হতে পারে সুগারের রোগীদের। ডায়েট কন্ট্রোল করতে গিয়ে খাবার বাদ দিলেন, অথচ ওষুধ খেয়ে নিলেন, তাতে এই সমস্যা হতে পারে।