সমীরণ পাল, অশোকনগর : যাদবপুরকাণ্ডে (JU Student Death) তোলপাড়ের মধ্যেই এবার অশোকনগর (Ashoknagar) নেতাজি শতবার্ষিকী কলেজে র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠল। প্রথম বর্ষের এক ছাত্রের অভিযোগ, পরীক্ষার জন্য গতকাল কিছু নথিপত্র জমা দিতে কলেজে গিয়েছিলেন। সেই সময় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কয়েকজন সদস্য ইউনিয়ন রুমে ডেকে তাঁকে মারধর, গালিগালাজ করেন। অভিযোগ, ওই ছাত্রের ফোন ও নথিপত্র কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন তাঁরা। র‍্যাগিং করা হয় তাঁকে, অশোকনগর থানায় এই অভিযোগ জানিয়েছেন প্রথম বর্ষের পড়ুয়া।


যদিও, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (TMCP) পাল্টা দাবি, ওই ছাত্র বহিরাগতদের নিয়ে কলেজে ঢুকেছিলেন। তাই তাঁকে ডেকে জিজ্ঞাসা করা হয়। কোনও র‍্যাগিং বা মারধর করা হয়নি বলে তাঁদের দাবি। সেদিন ঠিক কী ঘটেছিল, কলেজ কর্তৃপক্ষর কাছে লিখিতভাবে জানতে চেয়েছে পুলিশ। যদিও কলেজ কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।


এদিকে যাদবপুরকাণ্ড থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার র‍্যাগিং রুখতে তৎপর বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের জন্য সম্পূর্ণ আলাদা হস্টেল বণ্টনের সিদ্ধান্ত নিল কর্তৃপক্ষ। হস্টেলগুলিতে সিসি ক্যামেরা বসানো হবে বলেও জানিয়েছে তারা। হস্টেলের কোন রুমে কোন ছাত্র থাকছেন সেই তালিকা তৈরি করে নোটিস বোর্ডে লাগানো হবে। তার তালিকা থাকবে হস্টেল সুপার ও নিরাপত্তারক্ষীদের কাছেও। বাইরে থেকে কেউ হস্টেলে ঢুকলে নাম নথিভুক্ত করতে হবে রেজিস্টারে। অ্যান্টি র‍্যাগিং কমিটি তৈরির বিষয়ে আগামী সোমবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে  বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।


প্রসঙ্গত, যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য। নদিয়া থেকে পড়তে আসা ওই ছাত্রের মৃত্যুর পর ফের চর্চায় উঠে এসেছে র‍্যাগিং! ঘটনায় ধৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯। এদের মধ্যে ৪ প্রাক্তনী ও ৫ জন পড়ুয়া রয়েছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার পর থেকে জিজ্ঞাসাবাদে একই বয়ান দিচ্ছিলেন পড়ুয়ারা। বয়ানের বাঁধা গত প্রাক্তনীদের শেখানো বুলি বলেই মনে করেছিলেন তদন্তকারীরা। এরপরই টানা জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে আরও কয়েকজনের নাম। 


ঘটনায় আরও কয়েকজন পড়ুয়ার খোঁজ করা হচ্ছে। ধৃতদের জেরা করে আরও কয়েকজন পড়ুয়া ও প্রাক্তনীর খোঁজ পাওয়া গেছে। ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তাঁরা জড়িত বলে পুলিশ সূত্রে খবর। হস্টেলে পুলিশকে ঢুকতে না দেওয়ার ঘটনাতেও এরা জড়িত বলে খবর। ঠিক কী ঘটেছিল সেদিন? পরিচয়পর্বের নামে কীভাবে ছাত্রকে হেনস্থা ? ভিডিও উদ্ধারে ধৃতদের মোবাইল ফোনের ফরেন্সিক রিপোর্টের অপেক্ষায় পুলিশ ।


আরও পড়ুন ; 'IIT কর্তৃপক্ষ কড়া পদক্ষেপ নিলে, যাদবপুরের পড়ুয়াকে এভাবে চলে যেতে হত না', আক্ষেপ ফয়জানের মায়ের