সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, সন্দেশখালি : সন্দেশখালিতে মায়ের কোল থেকে শিশুকে ছিনিয়ে নিয়ে ছুড়ে ফেলার অভিযোগ ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। পুলিশের কাছে অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট চেয়েছে জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। তারপরেই আজ রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন তুলিকা দাসের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের প্রতিনিধিদল দল সন্দেশখালিতে গিয়ে ওই পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। দুই প্রতিনিধি কথা বলেন শিশুর মায়ের সঙ্গে। গত ৯ তারিখে এই ঘটনা ঘটেছে বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।


কী ঘটেছিল সেদিন ?


সেদিনের ঘটনা নিয়ে বিজেপি কর্মীর দিদি বলেন, "রাত ৩টের সময় পুলিশ-প্রশাসন নিয়ে এসে ওরা আমরা ভাইকে খুন করার জন্য তুলতে এসেছিল। যখন ওরা দরজা-জানালা ভাঙার চেষ্টা করছিল, সেই সময় আমার ভাই ফোনে কাউকে খবর দেয়। পাড়া-পড়শির চিৎকারে আমরা বেরিয়ে এসেছিলাম। ছুটে এসে দেখি, জানালা ভাঙা হয়ে গিয়েছে। দরজার দুটো খিলও ভাঙা হয়ে গিয়েছে। ছুটে এসে শুনলাম, বাচ্চাটাকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। আমি নিজের চোখে সেটা দেখিনি। কিন্তু, বাচ্চাটা কান্নাকাটি করছিল। তার মাকে তিন-চার জন মুখ চেপে ধরে রেখেছে। এক জন বুকে লাথি মেরে বলে তোর ছেলেকে বের করে দে। আমরা পাল্টা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করি। কিন্তু, ওরা অনেকে ছিল বলে পারিনি। কিছু লোকের গায়ে ছাপা পোশাক, কারও গায়ে কালো কোট ছিল। মুখে মাস্ক পরা ছিল। আমরা চিনতে পারিনি। আমরা ঢিল, লাঠি যা ছিল তা নিয়ে তেড়ে যায়। তাদের সঙ্গে মেয়েরাও ছিল। ওদের দলে ২৫-৩০ জন ছিল। আমার ভাই বিজেপি করে বলে হামলা চালানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে ভাই পলাতক। পুলিশের কাছে কী অভিযোগ জানাব পুলিশ নিজেই তো ছিল এখানে। থানার বড় বাবু নিজেও ছিলেন। আমরা দড়ি নিয়ে এসে বাঁধার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু, যখন তারা পরিচয় দিল থানার বড় বাবু বলে আমরা ছেড়ে দিই। আইনের লোকের কি আর মানহানি করতে পারি ! যিনি নিজেকে হিঙ্গলগঞ্জ থানার বড় বাবু বলে পরিচয় দিয়েছিলেন, তিনি দরজায় লাথি মেরেছিলেন বলে প্যান্ট ফেটে গিয়েছিল। সন্দেশখালি ও হিঙ্গলগঞ্জ থানার বড় বাবু ছিলেন। শিশুকে পুলিশ নিজেই ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। আমরা বাড়ি থেকে বেরোতে পারছি না। এখানে যারা তৃণমূলের আছে তারা অহরহ হুমকি দিচ্ছে, তুলে নিয়ে যাব। মজা দেখাব। স্বামীদের তুলে নিয়ে গিয়ে মজা দেখাব। এই ভয়ে আমরা হাটবাজার পর্যন্ত করি না। লোকের হাত দিয়ে বাজারহাট করে নিয়ে এসে খাই। আমি একা বাচ্চা নিয়ে লোকের বাড়িতে থাকি। নিজের বাড়িতে থাকি না। ডাক্তার দেখিয়ে শিশুটি এখন ভাল আছে।"