বারাসাত : 'ব্যাঙ্ক বাঁচাও, দেশ বাঁচাও' মঞ্চের সদস্যদের নাগরিক সভা । আজ বারাসাত পুরসভার (Barasat Municipality) পাশে বিদ্যাসাগর সভাকক্ষে মঞ্চের সদস্যদের উপস্থিতিতে হয়ে গেল সভা। সভায় মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। পরিপূর্ণ হলে এই অঞ্চলের সহ নাগরিকরা উপস্থিত ছিলেন।


মঞ্চের শুরু হয় কয়েক মাস আগে। ইতিমধ্যেই অভূতপূর্ব সাড়া পড়েছে মানুষের মধ্যে । আজও বিশাল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করে তোলে। এই মঞ্চ একাধিক ইস্যুতে সরব হয়েছে। তারা ব্যাঙ্কে সঞ্চয়কারীদের জমানো টাকার নিরাপত্তা, চুক্তিবদ্ধ কর্মীদের স্থায়ীকরণের দাবি-সহ বিভিন্ন দাবিতে সরব হয়েছে। 


এদিন গানের মাধ্যেমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। বক্তাদের বক্তব্যে উঠে আসে সরকারের বিভিন্ন জনবিরোধী নীতির কথা । সাধারণ মানুষের উপর তার কী প্রভাব পড়ছে তার উল্লেখ করেন বক্তারা। সাম্প্রতিককালে বায়োমেট্রিক জালিয়াতির কথাও তুলে ধরা হয়। এই মঞ্চ থেকেই প্রথম আলোকপাত করা হয়, RBI-এ চিঠির পর চিঠি দিয়ে কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয় বিষয়টি। তার পরেই সেই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। AEPS আর বাধ্যতামূলক নয়।


প্রসঙ্গত, আধারের বায়োমেট্রিক তথ্য চুরি করে প্রতারণা রুখতে পদক্ষেপ করা হয়েছে। ব্যাঙ্কগুলিকে আঙুলের ছাপ দিয়ে আধার যাচাই করে টাকা তোলার ব্যবস্থা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (National Payments Corporation of India)। তবে গ্রাহক চাইলে এই সুবিধা চালু রাখতে ব্যাঙ্কের কাছে আবেদন করতে পারেন। এনপিসিআই-এর এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানায় ব্যাঙ্ক বাঁচাও দেশ বাঁচাও মঞ্চ।  


ব্যাঙ্ক বাঁচাও দেশ বাঁচাও- সংগঠনের তরফে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (Reserve Bank of India) গভর্নরকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছিল। ইদানিং সারা ভারতে আধার তথ্য, বায়োমেট্রিক তথ্য চুরি করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সাফ করার অভিযোগ উঠেছে। সাধারণ-দরিদ্র বহু নাগরিক এই প্রতারণা চক্রের শিকার হয়েছেন। এই বিষয়টি নিয়েই উদ্বেগ প্রকাশ করে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল সংগঠনের তরফে। সংগঠনের তরফে দাবি ছিল, এর ফলে সাধারণ জনমানসে প্রবল ভীতির সঞ্চার হচ্ছে। ব্যাঙ্কের প্রতি সাধারণ গ্রাহকদের বিশ্বাসেও ধাক্কা খাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিলেন তাঁরা। নতুন অ্যাকাউন্ট খোলার সময় e-kyc ব্যবহার করা, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার লিঙ্ক করার মতো বিষয়গুলির বিরোধিতা করা হয়। এর সঙ্গেই বেশ কিছু পরামর্শও দেওয়া হয়েছিল সংগঠনের তরফে। তাঁদের দাবি ছিল, ব্যাঙ্কগুলিকে যেন নির্দেশ দেওয়া হয় যাতে গ্রাহকদের তারা অ্যাকাউন্ট খোলার সময় আধার কার্ড দিতে বাধ্য না করে। যে গ্রাহকরা আধার ডি-লিঙ্ক (De-Link Aadhaar) করাতে চান, তাঁদের যেন সেটা করতে দেওয়া হয়। কোনওভাবেই যেন চাপ সৃষ্টি না করা হয়।


তাদের আরও দাবি ছিল, যেন AEPS -এর মাধ্যমে নগদ তোলার সিস্টেম ডিফল্ট (Default) না করা হয়। একমাত্র কোনও গ্রাহক নিজে থেকে এই সুবিধা চালু করতে চাইলে, তবেই যেন এই সুবিধা চালু করা হয়। এই দাবিই মেনে নেওয়া হয়েছে। NPCI বা  ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া  AEPS এর মাধ্যমে টাকা তোলার ব্যবস্থা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বলে জানাচ্ছেন ব্যাঙ্ক বাঁচাও দেশ বাঁচাও কমিটির যুগ্ন কনভেনর সৌম্য দত্ত এবং বিশ্বরঞ্জন রায়।