সন্দেশখালি : দ্বিতীয় দিনের পর আজ তৃতীয় দিন। নতুন করে উত্তপ্ত সন্দেশখালি (Sandeshkhali)। দিনের পর দিন শেখ শাহজাহান (Sk. Shahjahan) বাহিনীর অত্যাচারের প্রতিবাদে জ্বলছে সন্দেশখালি। ৫২ ঘণ্টা পরেও সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহান বাহিনীর বিরুদ্ধে গ্রামবাসীর প্রতিরোধ অব্যাহত। শেখ শাহজাহান-ঘনিষ্ঠ শিবু হাজরার বাড়ি, পোলট্রিতে আগুন, মদের দোকান ভাঙচুর করা হয়। এলাকা দখলে পাল্টা অস্ত্র হাতে শেখ শাহজাহান, শিবু-বাহিনীর তাণ্ডব।


এই পরিস্থিতিতে সন্দেশখালির ঘটনায় শতাধিক অভিযুক্তের নামে এফআইআর দায়ের করলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা শিবপ্রসাদ হাজরা। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই এফআইআরের তালিকায় ১ নম্বরে নাম রয়েছে সন্দেশখালির প্রাক্তন বিধায়ক তথা সিপিএম নেতা নিরাপদ সর্দারের। ইঙ্গিতপূর্ণভাবে, আজই সন্দেশখালির ঘটনার পিছনে সিপিএম ও বিজেপির বিরুদ্ধে যৌথ চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন সন্দেশখালির তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার মাহাতো। আর এবার, তৃণমূল নেতার এফআইআরের তালিকায় পয়লা নম্বরে নাম প্রাক্তন সিপিএম বিধায়কের।


আজ তৃতীয় দিনে নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সন্দেশখালি। সন্দেশখালির পার্শ্ববর্তী জেলিয়াখালিতে উত্তেজনা চরমে পৌঁছয়। যেখানে আজ পথে নামেন মহিলারা। শিবু হাজরার পোলট্রি ফার্মে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠি হাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় পুলিশ। শিবু হাজরার বাড়িতে লাঠি হাতে ভাঙচুর চালায় স্থানীয় মানুষজন। মহিলাদের হাতে কাটারি দেখা যায়। লাঠি নিয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেয় গ্রামবাসী। ভাঙচুর, আগুন, হামলা, ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। কার্যত জনরোষে জ্বলছে সন্দেশখালি।


ইডির উপর হামলার পর এখনও বেপাত্তা শেখ শাহজাহান। দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতার দুই শাগরেদ শিবপ্রসাদ হাজরা ও উত্তম সর্দারের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফের অগ্নিগর্ভ সন্দেশখালি। কেন এই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ? হঠাৎ কেন অগ্নিগর্ভ সন্দেশখালি ?


কী বলছেন বিদ্বজ্জনেরা ? 


দীর্ঘদিনের অত্য়াচার। ধিকি ধিকি জ্বলতে থাকা ক্ষোভের বিস্ফোরণ। সেই বিস্ফোরণেই জ্বলছে সন্দেশখালি। দোর্দণ্ডপ্রতাপ শাসক নেতা ও তাঁর শাগরেদদের সীমাহীন অত্য়াচারের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াচ্ছেন মানুষ, মনে করেন বিদ্বজ্জনেরা। এপ্রসঙ্গে নাট্যব্যক্তিত্ব রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত বলেন, 'এটা একটা প্রতিক্রিয়া। এত অত্য়াচার। স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া। আনঅর্গানাইশড প্রতিক্রিয়া। ওরা নিজেরাই বলছে আমরা তৃণমূল করি। একটা আবেগের বহিঃপ্রকাশ। বাড়িতে আগুন দিচ্ছে এগুলো ওরা যেহেতু অত্য়াচারিত হয়েছে। তাই একটা প্রতিক্রিয়া হচ্ছে।'


পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় বলেন, 'জনরোষ তখনই হয় যখন মানুষ অত্য়াচারের শেষ সীমায় পৌঁছে যায়। দীর্ঘদিন অত্য়াচারের শিকার হতে হতে মানুষ রুখে দাড়াচ্ছে।'