সমীরণ পাল, বনগাঁ : বনগাঁ (Bongaon) সীমান্তে পার্কিংয়ে দুর্নীতির (Corruption) অভিযোগ। সোশাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট ঘিরে সামনে চলে এল তৃণমূলের দুই নেতার বিবাদ। নাম না করে তৃণমূল পরিচালিত বনগাঁ পুরসভার বর্তমান চেয়ারম্যানের দিকে আঙুল তুলেছেন প্রাক্তন চেয়ারম্যান। আর এই নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিজেপি।


সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটা পোস্ট। যার প্রতিবাদে পথে নামল তৃণমূল। কয়েকদিন ধরেই ফেসবুকে ঘুরছে এই পোস্টটি। যেখানে বনগাঁ গুডস ট্রাক অ্যাসোসিয়েশন বা BGTA-এর তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে যে, তৃণমূল পরিচালিত বনগাঁ পুরসভার কয়েকজন কর্মী BSF ক্যাম্প মোড়ে লরির পার্কিং স্লিপ চেকিংয়ের দায়িত্বে থাকেন, তাঁরা বিভিন্ন রকম অন্যায় কাজের সঙ্গে জড়িত। 


এখানেই শেষ নয়, বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যানের কাকার বিরুদ্ধেও গোপনে মাল পাচারের অভিযোগ তোলা হয়েছে পোস্টে। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, যে সংগঠনের তরফে এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তোলা হয়েছে সেই BGTA-র সম্পাদক হলেন তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্য। যিনি বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান।


অর্থাৎ গোটা ঘটনায় সামনে এল পুরসভার প্রাক্তন ও বর্তমান চেয়ারম্যানের আকচাআকচি। বনগাঁ গুডস ট্রাক অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ও তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্য বলেন, গত পরশু স্বপন শেঠ নামে এক ব্যক্তির লরি আটক করা হয় এবং দেখা যায় তিনি অ্যাসিডের নাম করে অন্য মাল নিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ তাকে আটক করে। এরই প্রতিবাদে তৃণমূল কংগ্রেসের কয়েকজন কর্মী-সমর্থক ফেসবুক পোস্ট করে, প্রশাসনকে এই বিষয়ের দিকে নজর দিতে বলেন এবং প্রতিবাদ জানান। যদি এই ঘটনা মিথ্যা হয় তাহলে প্রশাসন ব্যবস্থা নিক।


ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো, বনগাঁ-সহ রাজ্যের বিভিন্ন সীমান্তে ট্রাক টার্মিনাসগুলির দায়িত্ব পরিবহণ দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাই সেখানে এখন অস্বচ্ছতার কোনও সম্ভাবনাই নেই বলে দাবি করেছেন বনগাঁ পুরসভার বর্তমান চেয়ারম্যান। বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান ও তৃণমূল নেতা গোপাল শেঠ বলেন, এখন পার্কিংয়ের দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। আগে পার্কিং এর ক্ষেত্রে কিছু লোক অস্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করত । এখন স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করা হয়। অপবাদ যারা দেয় অচিরেই ধ্বংস হয়ে যাবে।


এদিকে বনগাঁ গুডস ট্রাক অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধে, থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। প্রতিবাদে বনগাঁয় বিশাল মিছিলও করে তারা।


এই নিয়ে আবার কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক দেবদাস মণ্ডল বলেন, তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের ফলেই এই ধিক্কার মিছিল। আগে পুরসভা পার্কিংয়ের দায়িত্বে ছিল । তখন অর্থের বিনিময়ে ৭০ থেকে ৮০টি গাড়ি লাইনের বাইরে যেত। এখন বিভিন্ন জেলার নেতাদের সুপারিশে গাড়ি যাচ্ছে। গাড়ি যাওয়ার বিনিময়ে অর্থের লেনদেন তো অবশ্যই আছে।


সব মিলিয়ে সীমান্ত ট্রাক পার্কিংয়ের দায়িত্ব রাজ্য সরকারের অধীনে গেলেও, তা নিয়ে বিতর্ক থামছে না।