সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় সিবিআই তদন্তের মধ্যেই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের মারে এক বিজেপি নেতার মৃত্যুর অভিযোগ উঠল উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগরে। পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে বিজেপি। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় খুন, ধর্ষণের মতো গুরুতর অভিযোগের তদন্ত করছে সিবিআই।তার মধ্যেই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের মারে পঞ্চায়েত স্তরের এক বিজেপি নেতার মৃত্যুর অভিযোগ উঠল উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগরে।
মৃত বিজেপি নেতা অরুণ কুমার সরকারের স্ত্রী শিবানী সরকারের অভিযোগ, তৃণমূলের লোকজন তাঁর স্বামীকে মেরেছে। এমনভাবে মেরেছে যে তাঁর স্বামী সহ্য করতে পারেননি। তিনি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার এই ঘটনা ঘটেছে। যাওয়ার সময় পিছন থেকে মেরেছে। এমন ভাবে মেরেছে বলার নয়।
এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সরগরম গোপালনগরের নহাটা ৮৭ পাড়া এলাকা। মৃত বিজেপি নেতার নাম অরুণকুমার সরকার। সুজয় নামে বেশি পরিচিত ছিলেন তিনি।বিজেপি সূত্রে খবর, চারবারের পঞ্চায়েত সদস্য অরুণ দিঘাড়ী গ্রামপঞ্চায়েতে বিরোধী দলনেতা ছিলেন। গত ৩১ অগাস্ট বিজেপি পরিচালিত চৌবেড়িয়া ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে অনাস্থা আনে তৃণমূল।
গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, আস্থাভোট চলাকালীন স্থানীয় বিধায়ককে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ঘেরাও করে। কাছেই উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেতা অরুণ। দুষ্কৃতীরা তাঁকে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ।
গোপালনগরের এক বিজেপি কর্মী মৃণাল বিশ্বাসের অভিযোগ, তাঁকেও আক্রমণের নিশানা করা হয়েছিল। অরুণ সরকারকে আমকাঠ দিয়ে মারা হয়। বিজেপি সূত্রে দাবি, আহত দলীয় কর্মীকে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রথমে পাল্লা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। শুক্রবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার বলেছেন, আমাদের আশঙ্কা ওই মারের ফলে ইন্টারনাল ইনজুরিতে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয়।
গোপালনগর ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি নিশীথ বালা অভিযোগ উড়িয়ে বলেছেন, তৃণমূল উশৃঙ্খল দল নয়। এসব সমর্থন করে না দল। যে কোনও মৃত্যু দুঃখজনক। আমরা ঘটনার দিন যতক্ষণ ছিলাম, ততক্ষণ এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এই ঘটনায় পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে বনগাঁ বিজেপি। এখন ময়না তদন্ত রিপোর্টের দিকে তাকিয়ে দুপক্ষ।
অন্যদিকে, খুন ও ধর্ষণের অভিযোগের তদন্তে বীরভূমের ইলামবাজার ও শান্তিনিকেতনেও যান সিবিআই আধিকারিকরা। পাশাপাশি, ভোট-পরবর্তী হিংসার তদন্তে শনিবার ফের কোচবিহারের চিলাখানায় যায় সিবিআই। তৃণমূলকর্মী খুনের অভিযোগের তদন্তে গিয়ে এদিন ঘটনার পুনর্নির্মাণ করেন তদন্তকারীরা।