সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগণা: টিটাগড়ের ওয়াগন কারখানায় (Titagarh Wagon) কাস্ট আয়রন (Cast Iron) তৈরির সময় বিপত্তি। গরম লোহার টুকরো ছিটকে ক্ষতিগ্রস্ত আশপাশের বাড়ি। আগুন ধরে যায় বেশ কয়েকটি গাছে। বৃষ্টির জলের সঙ্গে গরম লোহা সংস্পর্শে আসতেই দুর্ঘটনা। এমনটাই দাবি কর্তৃপক্ষের।


গভীর রাতে টিটাগড়ের কারখানায় দুর্ঘটনা


গভীর রাতে অঘটন (Accident)। গাছে গাছে জ্বলছে আগুন। জানালার লোহার গ্রিল ভেঙেচুরে ঢুকে এসেছে ঘরের ভিতরে। ভেঙে পড়েছে কংক্রিটের চাঁই, কাঠের দরজা।


উত্তর চব্বিশ পরগণার টিটাগড় ওয়াগন কারখানার একটি ইউনিটে, দুর্ঘটনার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত আটটি বাড়ি। স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার রাত দেড়টা নাগাদ, ওল্ড ক্যালকাটা রোডে, ওয়াগন কারখানায় কাস্ট আয়রন তৈরির সময় বিপত্তি ঘটে। বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে চারপাশ।


স্থানীয়দের দেওয়া ভিডিওয়ে দেখা যায়, ছিটকে পড়ে রয়েছে আগুনের ছোট-বড় গোলা। আগুন ধরে যায়, নারকেল গাছ-সহ একাধিক গাছে। আগুনের গোলা এসে পড়েছে বাড়িতেও।


এক আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দা বলছেন, 'যদি আমার সিলিন্ডার ব্লাস্ট হতো, তাহলে আমরা সবাই পুড়ে মরতাম।'


ব্যারাকপুরের বাসিন্দা সৈয়দ মহম্মদ জাফারুল্লাহ বলছেন, 'ঘরের মধ্যেই ছিলাম। আমার টালির ঘর। হঠাৎ দেখি আগুনের ফুলকি এসে পড়ছে। দেখলাম বড় বড় চাঁই পড়ে আছে। মানুষের গায়ে পড়লে সাংঘাতিক ঘটনা ঘটত। নারকেল গাছ জ্বলেছে ২০ মিনিট।


ব্যারাকপুরের অপর বাসিন্দা সৈয়দ মহম্মদ তাওফির কথায়, 'পরে বুঝতে পারলাম টিটাগড় স্টিল ফ্যাক্টরিতে ব্লাস্ট হওয়ায় এরকম হয়েছে। ঘরের টালি ভেঙে গেছে, ছাদ ফেটে গেছে, বাঁশ জ্বালিয়ে দিয়েছে। ক্ষতিপূরণের টাকা যেন পাই।'


কারখানা কর্তৃপক্ষ কী বলছে?


টিটাগড় ওয়াগন কারখানার কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, কারখানার কিছু জায়গায় বৃষ্টির জল জমে ছিল। সেখানেই কোনওভাবে গরম লোহা, বৃষ্টির জলের সংস্পর্শে আসতেই তা টুকরো টুকরো হয়ে চারদিকে ছিটকে পড়ে।


আরও পড়ুন: Malda News: মেশিন দিয়ে একশো দিনের কাজ, নালিশ করায় 'মারধর'


ব্যরাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান উত্তম দাস বলেন, 'যখন ওই ধাতু গরম করে কেক বক্সে ফেলা হয়, কেক বক্স ক্রেন দিয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়। যেহেতু বৃষ্টি পড়ছিল, তখন জলের সংস্পর্শে আসে। দু-চারটে বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। কোম্পানির সঙ্গে কথা হয়েছে। সমস্ত ক্ষতিপূরণ কোম্পানিকে দিতে হবে। কথা হয়েছে, অসুবিধা নেই।'


শনিবার রাতের এই 'আগুন বৃষ্টি'র ঘটনার পর, এখনও আতঙ্কে রয়েছেন এলাকাবাসী।