সমীরণ পাল, কাঁকিনাড়া (উত্তর ২৪ পরগনা) : উত্তর ২৪ পরগনার  কাঁকিনাড়া স্টেশনে (Kankinara Rail Station)  রেললাইন অবরোধ (Rail Blocked)। অবরোধ করলেন রিলায়েন্স জুট মিলের (Jute Mill) শ্রমিকরা (Workers)। 


এর ফলে শিয়ালদা কৃষ্ণনগর মেন লাইনে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। গতকাল জুট মিল বন্ধ করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রেললাইন অবরোধ করেন শ্রমিকরা। গতকাল কারখানা কর্তৃপক্ষ সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিশ জারি করে। মিল বন্ধ করায় এই মুহূর্তে কর্মহীন আনুমানিক পাঁচ হাজার শ্রমিক। সকাল    আটটা থেকে তাঁরা রেললাইন অবরোধ করেছেন।    জুট মিল খোলার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। শিয়ালদা-কৃষ্ণনগর শাখায় আপ ও ডাউন-দুই লাইনেই ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। অফিস টাইমে শিয়ালদা মেন শাখায় এই অবরোধে ভোগান্তির মুখে পড়েছেন যাত্রীরা। উল্লেখ্য, প্রতিদিনই এই শাখায় প্রচুর মানুষ ট্রেনে যাতায়াত করেন। ট্রেন চলাচল থমকে যাওয়ায় তাঁরা স্বাভাবিকভাবেই সমস্যায় পড়েছেন।


ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে রেল পুলিশ। অবরোধকারীদের বোঝানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শ্রমিকরা তাঁদের দাবিতে অনড়। যতক্ষণ না  তাঁরা মিল খোলার আশ্বাস পাবেন, ততক্ষণ অবরোধ চালিয়ে যাবেন বলে তাঁদের দাবি। 


উল্লেখ্য, নতুন বছরের প্রথম দিনই বন্ধ হয়েছিল হুগলির চন্দননগরের গোন্দলপাড়া জুটমিল। এর কিছুদিন পর বন্ধ হয় ডানকুনির সোনা বিস্কুট ফ্যাক্টরি। এরপর ঝাঁপ পড়েছিল চাঁপদানির নর্থব্রুক জুটমিলে। কাজে যোগ দিতে গিয়ে কারখানার গেটের সামনে সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিস দেখেন শ্রমিকরা।রাতারাতি কর্মহীন হয়ে পড়েন চার হাজারের বেশি শ্রমিক। হুগলিতে আচমকা কারখানা বন্ধ হওয়ায় রাজ্যের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে গেরুয়া শিবির। পাল্টা জবাব দিয়েছে শাসক পক্ষও।


গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকেই হুগলি শিল্পাঞ্চলের একটার পর একটা জুটমিলে তালা ঝুলছে।রিষড়ার ওয়েলিংটন জুটমিল, শ্রীরামপুরের ইন্ডিয়া জুটমিল এবং ভদ্রেশ্বরের শ্যামনগর জুটমিল বন্ধ হওয়ায় কাজ হারিয়েছেন হাজার হাজার শ্রমিক।  সেই তালিকায় জুড়েছে নর্থব্রুক জুটমিলের নাম।
আর এই অবস্থায় বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ট্যুইটে লিখেছিলেন,রাজ্যে শিল্পায়নের কী দশা, তা চলতি বছরের প্রথম দশদিনেই স্পষ্ট। সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিস ঝুলেছে চন্দননগরের গোন্দলপাড়া জুটমিল, নৈহাটি জুটমিল ও ডানকুনির সোনা বিস্কুট কারখানায়। প্রত্যুত্তর দিতে দেরি করেনি তৃণমূলও। 


শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি,কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির জন্যই জুটমিলগুলি বন্ধ হচ্ছে। এর জন্য রাজ্য সরকার দায়ী নয়। আমরাই জুটমিল খোলার চেষ্টা করছি। এটা নিয়ে রাজনীতি করছে বিজেপি।