সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: সবে কাজ হচ্ছে, তার মধ্যেই ফাটল দেখা গেল উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Pargana) দেগঙ্গায় নির্মীয়মান কালভার্টে। আর সেই ঘটনা ঘিরে উঠল কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ। যার জেরে শুরু হয়েছে প্রবল রাজনৈতিক তরজাও। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন তৃণমূল বিধায়ক। 


কী অভিযোগ:
সবেমাত্র কাজ হচ্ছে, তার মধ্যেই কালভার্টের গায়ে বড়সড় ফাটল দেখা গিয়েছে। কালভার্টের একাধিক জায়গায় চিড় ধরেছে। ঘটনাস্থল উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার (Deganga) চাকলা গ্রাম পঞ্চায়েতের বেলেখালি গ্রামের। সেখানেই বাইকের বিলের উপর তৈরি হচ্ছে কালভার্ট। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সরকারি টাকা নয়ছয় হয়েছে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে কাজ করা হচ্ছে কালভার্টের। দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে খোদ তৃণমূল বিধায়কের। চাকলা, দেগঙ্গার বাসিন্দা নুরুজ্জামান মণ্ডল বলেন, '৪২ লক্ষ টাকা এমএলএ স্যাংশন করেছিল। কাজ হয়নি। এখনই বসে গিয়েছে। সাপোর্ট দেওয়ার জন্য প্লাস্টার করে দিয়েছে। প্রায় ২০-২৫ লক্ষ টাকা দুর্নীতি করে নিয়েছে এমএলএ সাহেব। এর সঙ্গে এমএলএ-র ফুল লিঙ্ক আছে।' একই অভিযোগ করেছেন আর এক বাসিন্দা অর্জুন রায়। তিনি বলেন, 'দুর্নীতি তো অবশ্যই হয়েছে। ৪২ লাখ টাকায় এরকম ব্রিজ হবে? প্রথম থেকেই বসেছিল। বারবার অভিযোগ করেছি। বলেছে পরে ঠিক করে দেবে।'  


কালভার্টের খুঁটিনাটি:
৭ মাস আগে শিলান্যাস হয়েছে, মাত্র ২ মাস আগে তৃণমূল পরিচালিত উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে শুরু হয়েছে কালভার্ট তৈরির কাজ। গোটা কাজ করচে খরচ ধরা হয়েছে ৪২ লক্ষ টাকা। শুরুতেই হোঁচট, কালভার্টের গায়ে দেখা গিয়েছে বিপজ্জনক ফাটল।  


আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি:
কালভার্ট তৈরির সময়েই এমন ঘটনায় তীব্র সমালোচনা করেছে বিজেপি (BJP)। গোটা ঘটনায় কাটমনির প্রসঙ্গ তুলে এনেছে বিরোধী দল। বিজেপির বারাসাত সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক  তরুণকান্তি ঘোষ বলেন, 'এমএলএ থেকে শুরু করে প্রত্যেকে সরকারি টাকা তছরুপ করেছে। ব্রিজটায় কোনও কলম পিলার নেই। ইটের ওপর গেঁথে তুলেছে। সরু সরু রড দিয়ে। কাটমানির রাজত্ব চলছে।'


দেগঙ্গার তৃণমূল (TMC) বিধায়ক রহিমা মণ্ডল বলেন, 'অলরেডি ইঞ্জিনিয়ারকে রিপোর্ট করেছি। বলেছি স্পটে যান। ইন্সপেকশন করুন।' অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ।


আরও পড়ুন: ব্যানারে রয়েছে নাম, কিন্তু মঞ্চের নেই জেলা সভাপতি, কেন?