সমীরণ পাল, কমলকৃষ্ণ দে, রঞ্জিত হালদার, দেগঙ্গা, (উত্তর ২৪ পরগনা): গরুর দুধে (Cow Milk) সোনার তত্ত্ব শুনিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। এবার গরুর মূত্রথলিতে সোনা আছে এই ভেবে, উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Pargana) দেগঙ্গায় প্রায় ৫০ হাজার টাকায় তা কিনেও নেন এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী। যদিও গরুর মালিকের দাবি, পাথরকে সোনা ভেবেই কিনেছেন ব্যবসায়ী। 


সালটা ২০১৯,  দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, গরুর দুধে সোনার ভাগ আছে। তাই হলুদ রং। পিঠে যে কুঁজ থাকে, সেখানে স্বর্ণ নাড়ি রয়েছে। তাতে সূর্যের আলো পড়লে সোনা তৈরি হয়। তাই গরুর দুধ হলুদ রঙের হয়।


গরুর দুধে সোনার খোঁজ পেয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ! আর এবার গরুর মূত্রথলিতে জমতে থাকা পাথরে সোনার হদিশ পেলেন এক ব্যবসায়ী! কয়েক হাজার টাকা দিয়ে বেশ কিছু সোনালি রঙের পাথর কিনেও ফেললেন।
 
গরুর পেটে এমনই সোনালি রঙের পাথর দেখে উত্তর ২৪ পরগনায় দেগঙ্গায় তোলপাড় পড়েছে। পাথর সোনা আছে ভেবে, তিন হাজার টাকায় তা কিনেও নেন এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী ।


গরুর মালিক আনসার আলি বলছেন, গরুর ভিতর থেকে পাথরের মতো কিছু বেরোয়। অনেকে বলছিল সোনা। দু’একজন বলে পাথর। পাথরগুলো একজন ৩ হাজার টাকায় নিয়ে যায়।


পশু চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মানুষের মতো গরু-ছাগলের গলবাল্ডারেও পাথর জমে। আর সেই পাথরকে সোনা ভাবা এক্কেবারে অযৌক্তিক।


পশু চিকিৎসক উৎপল পালের কথায়, ওগুলো মূত্রথলির মধ্যে থেকে এমন রং হয়ে গিয়েছে। ভাঙলে তো বুঝতে পারবে। ছাগল-গরুদের স্টোর এমন জন্মায়। সোনা কখনও হয় না।


উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার বাসিন্দা শাহজাহান মল্লিকের কথায়, সোনা নয়, মানুষের ভুল প্রচার। সোনা নয়, পাথর এটা। ওরা নিয়ে যাচাই করবে, গোমূত্র থেকে কিছু পাওয়া যায়নি। 


দেগঙ্গার ঘটনাকে হাতিয়ার করে ফের নিজের তত্ত্ব সামনে এনেছেন দিলীপ ঘোষ। পাল্টা বিদ্রুপ করেছে তৃণমূল। দিলীপ ঘোষ বলছেন, যারা গোমূত্র ও সোনার ধার ধারে না,তারা নাচানাচি করেছিল। পৃথিবীতে বিজ্ঞান নিয়ে অনেক গবেষণা হচ্ছে সেখানে অনেক তথ্য এসেছে। কিছু লোক না জেনে হাসাহাসি করে,লাফালাফি করে, তাদের প্রতি আমার দয়া হয়। সব মিলিয়ে আজগুবিকাণ্ডে দেগঙ্গা এখন তোলপাড়।


কী বলছে যুক্তিবাদী মঞ্চ? দাবির মানুষের যেমন গলব্লাডারে স্টোন হয় ঠিক তেমনি গবাদি পশুদের পেটেও এই ধরনের স্টোন হতে পারে যা হয়ত স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের কাজে লাগে। গরুর মূত্র গোবর থেকে সোনা পাওয়ার ব্যাপারটি সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়ে বিষয়টি গুজব বলেই জানিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু গরুর পেট থেকে উদ্ধার হওয়া পাথর সোনা বলে রটে যাওয়ায় স্থানীয় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।