সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: কাজ না করলে সরিয়ে দেওয়া হবে পদ থেকে। যাঁরা যেমন কাজ করেছেন, সেই কাজের মূল্যায়নের ভিত্তিতেই দেওয়া হবে ভোটের টিকিট। এমনই বক্তব্য শোনা গেল বনগাঁয় তৃণমূলের মঞ্চ থেকে। বক্তা বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার তৃণমূলের (TMC) সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস। বনগাঁ (Bongaon) জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন সভাপতি ও চেয়ারম্যানের ডাকে বনগাঁ নীলদর্পণ অডিটোরিয়ামে তৃণমূলের কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল বৃহস্পতিবার। এদিনের এই সভাতে তৃণমূলের সব নেতাই উপস্থিতি ছিলেন। সেখানেই এমন বক্তব্য রাখেন বিশ্বজিৎ দাস। 


কী বললেন বিশ্বজিৎ:
মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, 'কোনও নেতা ধরে এবারের টিকিট পাবেন না। যাঁরা কাজ করেছেন, সেই কাজের মূল্যায়ন হবে। দল কিন্তু আপনার মূল্যায়ন করার জন্য, আমার কথা শুনবে না।' 


সব ঠিক থাকলে আগামী বছরেই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছে। তার আগে প্রার্থী করা নিয়ে ফের সতর্কবার্তা শোনা গেল তৃণমূল নেতার গলায়। সেই কথাই দলের সহকর্মীদের জানিয়ে দিলেন, উত্তর চব্বিশ পরগনার বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার তৃণমূলের নতুন সভাপতি বিশ্বজিৎ দাসের। বনগাঁর একটি প্রেক্ষাগৃহে আয়োজিত কর্মিসভায় তিনি বুঝিয়ে দেন, কাজের মূল্যায়নের উপরেই সব কিছু নির্ভর করছে। এদিন তিনি আরও বলেন, 'দল কিন্তু মূল্যায়ন করছে, আপনারা জানতে পারছেন না। আপনারা চার-সাড়ে চার বছর ধরে কী কাজ করেছেন, কে কেমন কাজ করেছেন, দল তার মূল্যায়ন করবে। এখনও সময়ও আছে, মানুষের পাশে যান। মানুষের সঙ্গে কথা বলুন। নিজেদের মাটির কাছে নামান।'


তৃণমূল-বিজেপি-তৃণমূল:
২০১৯ সালে দিল্লিতে, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে (BJP) যোগ দিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ দাস! ২০২১-এর, বিধানসভা ভোটে বিজেপির টিকিটে জেতেন তিনি। পরে ফের হাতে তুলে নেন তৃণমূলের পতাকা। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি।


গত পয়লা আগস্টে গোপাল শেঠকে সরিয়ে, বিশ্বজিত্‍ দাসকে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি করে দল। তারপরও বনগাঁ পুরসভার বর্তমান চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ ও প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যর আকচাআকচি থামার কোনও লক্ষ্মণ দেখা যায়নি। যা নিয়ে বারবার গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগ তুলে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। যদিও বিশ্বজিৎ দাসের দাবি, তৃণমূলে কোনও দ্বন্দ্ব নেই।


বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক দেবদাস মন্ডল বলেন, 'তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দল ছিল আছে থাকবে। মাছ যেমন জল ছাড়া বাঁচে না তৃণমূল কংগ্রেসও গোষ্ঠী কোন্দল ছাড়া বাঁচবে না।'


তৃণমূলের দাবি:
তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, 'বনগাঁতে নতুন জেলা সভাপতি হওয়ার পরেই আমি বলেছিলাম তৃণমূল কংগ্রেসের কোন গোষ্ঠী কোন্দল নেই । আজ সবস্তরের নেতৃত্বের উপস্থিতিতে তা আবার প্রমাণিত হল।'


বোলপুরের তৃণমূল বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিন্হা থেকে শুরু করে, হাড়োয়ার তৃণমূল বিধায়ক শেখ হাজি নুরুল ইসলাম, জলপাইগুড়ির তৃণমূল সভানেত্রী মহুয়া গোপ। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী করা নিয়ে, সম্প্রতি অনেককেই কড়া বার্তা দিতে শোনা গিয়েছে। এবার যা শোনা গেল বিশ্বজিৎ দাসের গলাতেও।


আরও পড়ুন:  ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ কর্মসূচির প্রভাব! পতাকার চাহিদা তুঙ্গে, কারখানায় রাতজেগে চলছে কাজ